11.6 C
Toronto
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

ছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে ঝলসে দিলেন চবি শিক্ষক

ছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে ঝলসে দিলেন চবি শিক্ষক

অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক অনাবিল ইহসান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অনাবিল ইহসানের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধর ও শরীরে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও নিজ বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করেছেন স্ত্রী নিশাত জাহান (৩০)। তবে বিষয়গুলো অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।

জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর অনাবিল ইহসান তার স্ত্রী নিশাত জাহানকে তালাক দেন। এ ঘটনায় গত ৫ নভেম্বর স্থানীয় থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নিশাত। একই ঘটনায় গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরীর আদালতে স্বামী অনাবিলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে মামলা করেন। আদালতের আদেশে গত ৫ ডিসেম্বর অনাবিলসহ শ্বশুর মো. আব্দুল খালেক বিশ্বাস (৬০) ও শ্বাশুড়ি শরীফা আক্তার বানুকে (৫৩) আসামি করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় আরেকটি মামলা হয়।

- Advertisement -

থানা সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তথা দহনকারী গরমপানির মাধ্যমে অভিযোগকারীর হাতের ক্ষতি, যৌতুকের দাবিতে মারাত্মক জখম ও সহায়তার অপরাধের বিষয়টি মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে-পারিবারিকভাবে নিশাত জাহানের সঙ্গে অনাবিলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন আসবাবপত্রের জন্য নিশাতকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি অপমান করতেন। পরে জমি কেনার জন্য নিশাতের পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে অনাবিল। এরই মধ্যে ওই শিক্ষক সংগীত বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি তার স্ত্রী অনাবিলের পরিবারকে জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিশাতকে মারধর ও হাতে ফুটন্ত চায়ের পানি ঢেলে দেন অনাবিল। এতে নিশাতের বাম হাতের কনুই থেকে নিচের অংশ ঝলসে যায়। পরে ভুক্তভোগী চবি চিকিৎসা কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ বিষয়ে নিশাত জাহান বলেন, আমার স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি গত ১০ সেপ্টেম্বরে জানতে পারি। এর দুদিন পর বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে মারধর এবং গরম চা ঢেলে আমার হাত ঝলসে দেয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ, ডিন, প্রক্টর অফিস ও শিক্ষক সমিতিতে এই ঘটনার সমাধান চেয়ে অনুলিপি দিয়েছি। উপাচার্যের কার্যালয়েও গিয়েছে। এতেও সমাধান না হওয়ায় আমি আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। তবে স্বামী অনাবিলের সাথে তালাকের বিষয়টি অস্বীকার করেন নিশাত জাহান। তিনি বলেন, আমি কোনো আইনি নোটিশ পাইনি।

তবে স্ত্রীকে মারধর ও প্রেমের অভিযোগটি অস্বীকার করে চবি শিক্ষক অনাবিল ইহসান বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া মেনে গত ২৩ অক্টোবর তালাক দিয়েছি। দুই মাস পর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এছাড়াও আমার সম্মানহানি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদে অভিযোগ দাখিল করে।

পরকীয়া অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যার কথা নিশাত বলতে চাইছে, সে আমার ছাত্রী। আমার নৈতিক অবস্থানের দিক থেকে এটা কখনোই সম্ভব না।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসআই মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা মামলার তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্য কাজ করছি। শেষ হলে তা আদালতে প্রেরণ করবো। আসামি অনাবিল হাইকোর্ট থেকে এখন জামিনে আছেন বলেও জানান তিনি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles