
সরকার বিরোধী আন্দোলনে মশাল মিছিল করায় পঞ্চগড়ে এক যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। জেলা সদরের শিংপাড়া এলাকায় গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই যুবদল নেতার স্ত্রী।
পঞ্চগড় জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবুর স্ত্রী ইতি আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মশাল মিছিল করায় পুলিশ আমাদের বাড়িতে এসে দুই দিন তল্লাশি চালায় এবং আমার সন্তানদের সামনেই পুলিশ আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে কলিজা বের করে কুকুরকে খাওয়ানোর হুমকি দেয়। যে মশাল দিয়ে মিছিল করেছে সেটি দিয়ে পুড়িয়ে মারারও হুমকি দিয়েছে।
আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। থানায় অভিযোগ করে শত্রুতা বাড়াতে চাইনি তাই দলের যুগ্ম মহাসচিবকেই অভিযোগ দিয়েছি। আমার স্বামী এখনো আত্মগোপনে আছে। তাঁর কাছে মোবাইল নেই।
কোথায় আছে কিভাবে আছে আমরা জানি না। আমার স্বামীর কিছু হলে যারা হুমকি দিয়েছে তাঁরাই দায়ী থাকবেন। আমাদের চেয়ে আমার স্বামীকে নিয়ে বেশি দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা।’
ইতি আক্তার আরো বলেন, ‘যেসব পুলিশ এসেছিল তাদের একজন বাদে সবাই সাদা পোশাকে ছিল।
সম্ভবত তাঁরা সদর থানার পুলিশ। আমাদের কোনো অভিযোগের জায়গা নেই। কোনো বিচার নেই।’
কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন না জানিয়ে ইতি বলেন, ‘আমি শত্রুতা বাড়াতে চাই না। আমার কিছু হলে কেউ খোঁজ নেবে না।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে জানতে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদার মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিরুল্লাকে মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
বিষয়টি বিএনপির সিনিয়র যগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন ইতি আক্তার। গতকাল বুধবার পাঠানো ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ‘গত ২৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশের লোক আমার বাসায় আসেন। নুরুজ্জামান বাবু এ সময় বাসায় ছিলেন না। তাঁকে বাসায় না পেয়ে আমার ছোট দুই বাচ্চা, আমার শ্বশুর—শাশুড়িসহ আমার সামনে বলেন যে, নুরুজ্জামান বাবু লিফলেট বিতরণ করে, মশাল মিছিল করে ব্যাটাকে পেলে গুলি করে বুকটা কেটে কলিজাটা বের করে কুকুর দিয়ে খাওয়াব। যে মশাল দিয়ে মিছিল করে সেই মশাল দিয়ে জ্বালায় মারব।
চিঠিতে ইতি আরো বলেন, ‘এর আগে গত ২৩ তারিখ রাতে সাড়ে ১২টার পর আমার বাসায় পুলিশের প্রায় ১৮ থেকে ২০ জন লোক তল্লাশি চালায়। নুরুজ্জামান বাবুকে বাসায় না পেয়ে আমার শ্বশুরকে ভয়-ভীতি দেখায়। পুলিশ শ্বশুরকে বলেন যে, আপনার ছেলেকে যেখানে পাব সেখান থেকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যাব। ধরতে পারলে লাইফ শেষ করে দিব। আপনার ছেলেকে না পেলে আপনাকে নিয়ে যাব। আপনার ছোট ছেলেকে নিয়ে যাব।’
বাবুর স্ত্রী আরো বলেন, নুরুজ্জামান বাবুর নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত তিনি। নুরুজ্জামান বাবুর কিছু হলে এর সব দায়-দ্বায়িত্ব এই সরকারকেই বহন করতে হবে।