
নাসিমা সুলতানা তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমার সাথে পত্রে যোগাযোগ। সে একটা কবিতার পান্ডুলিপি পাঠালো- ‘মৃগয়ায় যুদ্ধের ঘোড়া’ নামে।
কথা বললাম, মুক্তধারার চিত্ত দা’র সাথে। তিনি সে-টা রিভিউয়ারের কাছে পাঠালেন। ক’দিন পর ‘রিভিউয়ার’ কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আমাকে ফোন করলেন, দেখা করার জন্য। হুদা ভাই বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক। সেই সময় বাংলা সাহিতের তিন দিকপাল কবি পাশাপাশি বসেন। তিন জনেই উপ পরিচালক। আসাদ চৌধুরী, রফিক আজাদ এবং কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। যাঁদের কবিতা পড়ে বড় হয়েছি। সে সব স্মৃতি দীর্ঘ!
হুদা ভাই পান্ডুলিপি নিয়ে আলোচনায় বসলেন এবং কয়েকটি কবিতা ‘বাদ’ দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েন। কারণ, কবিতাগুলো একটু বেশি-বেশি ‘এডাল’; যা মুক্তধারার নীতিমালার সাথে যায় না।
‘বাদ দেয়া’ কবিতাগুলোর সাথে আরো কিছু যুক্ত করে আমাদে দু’জনের যৌথ কবিতার বই (তবু কেউ কারো নই) বের করলাম।
এদিকে হুদা ভাই নিজ দায়িত্বে ‘মৃগয়ায় যুদ্ধের ঘোড়া’ এডিট করলেন, ফাইনাল প্রুফ দেখলেন এবং নিজের তত্ত্বাবধানে নাসিমার যুদ্ধের ঘোড়া মাঠে ছেড়ে দিলেন। হুদা ভাইয়ের এই অজানা অবদান কেউ জানে না।
—–
গত মাসের ১৭ তারিখে নাসিমা সুলতানার মৃত্যুদিবস ছিলো। কিন্তু কেউ তাকে মনেও করেনি। আমি লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কি আর লিখবো? বাংলা একাডেমি থেকে সেলিনা (হোসেন) আপা তাঁর জীবনী লেখার জন্য চিঠি দিয়েছিলেন, আংশিক লিখে আর শেষ করা হয়নি!
অথচ বন্ধু হিসেবে দায়িত্বটা পালন করা উচিত ছিলো। সেই অপরাধবোধটা এখনো কাজ করে। তবে তার সব ক’টি বই প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার ভূমিকা ছিলো।
আগামীকাল ১৫ জানুয়ারি নাসিমা সুলতানা ওরফে মিতুর জন্মদিন। মিতু তুমি যেখানেই থাকো, ভালো থেকো বন্ধু আমার।