
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কুড়িগ্রামের রৌমারীর শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়নব খাতুনের ভর্তি পরীক্ষার অদম্য সংগ্রামের গল্প বলা হতো। গতকাল শনিবার বান্দরবানে এক দুর্ঘটনায় নিহত হন সেই জয়নব খাতুন।
জয়নব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। থাকতেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে।
তাঁর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া বাউশমারী গ্রামে।
জয়নবের ভর্তি পরীক্ষার সময়ের সংগ্রামের কথা বলে একই উপজেলার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রাজীব আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় জয়নব কোচিং করার সুযোগ পাননি। কিন্তু অদম্য ইচ্ছার কারণে বাসায় থেকে নিজেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন৷ ঢাকায় কোচিং করা কয়েকজন সহপাঠীর কাছ থেকে নোট সংগ্রহ করে পড়াশোনা করে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন।
রাজীব আহমেদ বলেন, ‘জয়নবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অদম্য সংগ্রামের গল্প বলে আমরা এলাকার শিক্ষার্থীদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধে উৎসাহ দিতাম।
হঠাৎ রৌমারীর এক অপার সম্ভাবনা নিভে গেল নিমিষেই।’
জয়নব ছিলেন ঢাবি রেঞ্জারের সদস্য, ঢাবি হিমু পরিবহন শাখার যুগ্ম সম্পাদক, ‘নারীদের ভ্রমণ সংগঠন ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ-ভ্রমণকন্যা’র সদস্য এবং নারীর চোখে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের জোন লিডার। তাঁর রুমমেট ফালগুনী আক্তার বলেন, ‘আপু অনেক অ্যাকটিভ ছিলেন। সারা দিন পরিশ্রম করতেন।
সংগঠন করতেন অনেক। অনেক প্রাইজও আছে তাঁর। হাসি ছাড়া কখনো কথা বলেননি।’
জয়নবের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে।