
মুশতাক তিশার অসম বয়সী বিয়ে নিয়ে আমার মনে হয় না তেমন কেউ কিছু বলেছে। তারা দেশের আইন, ধর্মীয় আইন কোনটাই ভাঙে নি। যেটা নিয়ে আমি বা আমরা কেউ কেউ বলছি সেটা হলো মুশতাক যে কাজটা করেছে তা কোন ভাল উদাহরণ নয়। একজন ব্যক্তি স্কুলের ব্যবস্হাপনা কমিটির সদস্য হয়ে কি করে তিনি স্কুলের একজন অভিভাবকের মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করতে পারে? স্কুল ব্যবস্হাপনা কমিটির কাজ হলো স্কুলের ভাল মন্দ দেখাশোনা করা।
যিনি রক্ষক তিনি ভক্ষক হন কি করে? এটাই তার বড় অপরাধ। এটা সমাজে চরম খারাপ উদাহরণ তৈরী করেছে। তারপর তিনি যে অন্যায়টা করেছেন সেটা নিয়ে বই লিখে অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবার চেষ্টা করছেন। ভাবখানা এমন যে দেখ আমি পেরেছি, তোমরাও করতে পার! আবার বই লিখেই ক্ষান্ত হয় নি, বই মেলায় গিয়ে এমন ভাব করছেন যেন একজন খ্যাতিমান তারকা এসেছেন জনগণকে প্রেরণা দিতে! সমাজে অনেক অন্যায় ঘটছে যা আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় না হলেও সমাজ কাঠামো, সমাজের ডিসিপ্লিন, ভক্তি শ্রদ্ধা ভেঙে দেবার জন্যে যথেষ্ট!
মুশতাক কিংবা ডাক্তার সাবরিনাদের উচিত ছিল সমাজে মুখ লুকিয়ে থাকা, নীরবে নিভৃতে কাটানো। অন্যায় অপরাধ করে সেটা আবার ফলাও করে, গর্ব করে প্রচার করা আরো বড় অন্যায়। আমাদের সমাজে অসম বিয়েতো দুরের কথা, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক যুবতীর প্রেম করে ঘর থেকে পালিয়ে বিয়ে করাটা এখনো অতটা ভাল চোখে দেখা হয় না। আর পয়ষট্টি বছরের একজন মানুষ একজন তরুণীকে যে কায়দায় ঘর থেকে বের করে নিয়ে কোর্ট কাচারী করে, ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে বিয়ে করেছে তা চরম দৃষ্টিকটু এবং সামাজিক শৃংক্ষলা, বাবা মা’য়ের সন্তান লালন পালন করার কষ্টসাধ্য প্রচেষ্টাকে নিমিষেই গুড়ো গুড়ো করে দেবার জন্যে যথেষ্ট। আবারও বলছি এটা আইন বা ধর্মীয় দৃষ্টিতে অবৈধ না হলেও সমাজের একটা ক্ষত হিসেবেই অধিকাংশ সন্তানের বাবা মা’য়েরা মনে করবে।
কাজেই তাদের বিয়েটা অবৈধ না হলেও বই বের করে বই মেলায় গিয়ে দাঁত কেলিয়ে নিজেদের অপকর্মকে প্রতিষ্ঠা করা আর ভাইরাল হবার চেষ্টা না করাই ভাল ছিল। তাদের উচিত নিরবে নিভৃতে জীবন যাপন করা, সুগার ড্যাডি সংস্কৃতিকে উৎসাহিত না করার চেষ্টা করা। করলে রাস্তাঘাটে আরো বেশী অপমান হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
স্কারবোরো, কানাডা