11 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫

বৃদ্ধা সেজে ইন্টারনেট স্ক্যামারদের পরিচয় ফাঁস করলেন ইউটিউবার

বৃদ্ধা সেজে ইন্টারনেট স্ক্যামারদের পরিচয় ফাঁস করলেন ইউটিউবার - the Bengali Times

ভুয়া কল করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিশাল পরিমাণের অর্থ হাতিয়ে নেয় ইন্টারনেট স্ক্যামাররা। তবে নিল হ্যারিস নামের এক ইউটিউবারের বদৌলতে নিজেদের তৈরি ফাঁদেই ফেঁসে গেছেন বেশ কয়েকজন স্ক্যামার। বৃদ্ধ দাদি সেজে ইন্টারনেটে এসব স্ক্যামারদের পরিচয় ফাঁস করে এই ইউটিউবার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

- Advertisement -

সাধারণত, প্রযুক্তি বিষয়ে কম দক্ষ ব্যক্তিদের টার্গেট করে স্ক্যাম কল করে থাকে স্ক্যামাররা। বিশেষ করে, বয়স্ক ব্যক্তিদের এসব ফোন কল দেওয়া হয়। কারণ, প্রযুক্তি ব্যবহারে বয়স্করা কিছুটা পিছিয়ে থাকেন। আর তাই তাদের বোকা বানানোও তুলনামূলক সহজ।

যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের স্ক্যাম কলের সংখ্যা অনেক বেশি। এসব ফোন কলে স্ক্যামাররা নিজেদের আমাজনের মতো বড় বড় কোম্পানির কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য (যেমন, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর, বাড়ির ঠিকানা) জানিয়ে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জন করে এবং তাদের ব্যাংকে যেতে বাধ্য করে। আর বিশাল পরিমাণ অর্থ আশপাশের কোনো ঠিকানায় বা অপেক্ষারত গাড়িতে দিয়ে আসতে বাধ্য করে।

তবে এ ধরনের স্ক্যামের সঙ্গে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচনে কৌশলের আশ্রয় নেন স্ক্যাম স্যান্ডউইচ ইউটিউব চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাতা নিল হ্যারিস। তিনি ৮০ বছরের বিধবা বৃদ্ধা সেজে স্ক্যামারদের কল ধরে ভয়েস চেঞ্জ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজের কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে কথা বলতেন।

এরপর, নিল স্ক্যামারদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার অভিনয় করতে থাকেন। স্ক্যামাররাও তাঁর কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে তাঁকে টাকা পাঠানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। নিল হ্যারিস এসবের না বোঝার ভান করেন এবং স্ক্যামারদের কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের সব ডেটা কপি করে ফেলেন। একই সঙ্গে ওয়েবক্যামের মাধ্যমে তাদের ছবি তুলে ফেলতেন। পরে সেসব ছবি, লোকেশন ও কৌশল ইউটিউবে প্রকাশ করতেন। নিউইয়র্ক পোস্ট এই কাজের জন্য নিলকে ‘ডিজিটাল রবিন হুড’ আখ্যা দিয়েছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসোসিয়েশন অব রিটায়ার্ড পারসনসের হিসাবে বলা হয়, প্রতিবছর ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলারের স্ক্যামের শিকার হন। এসব কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে প্রতি ১০ জনে ১ জন বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

নিজের কাজে বিষয়ে নিল বলেন, ‘আমি ভয়েস মুড ব্যবহার করে (ভয়েস-অল্টারিং সফটওয়্যার) স্ক্যামারদের কাছে ভুয়া ফোন কল করি। এ সময় জাল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও জাল উপহার কার্ড ব্যবহার করি।’ নিলের ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওতে ৮০ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে। গত নভেম্বরের প্রকাশিত একটি ভিডিও ১০ লাখ ভিউ হয়ে ভাইরাল হয়।

এসব স্ক্যাম কলের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই দেখা যায়, স্ক্যামাররা সিভিএস বা ওয়ালমার্টে গিয়ে হাজার হাজার ডলার মূল্যের গিফট কার্ড কিনতে উদ্বুদ্ধ করে। এই গিফট কার্ড স্ক্যাম পদ্ধতি অনলাইন প্রতারকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ স্ক্যামার সাধারণত ভারতীয়। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর নাগরিক হওয়ার ভান করে।

নিল স্ক্যামারদের সব ডেটা নেওয়ার পর তাদের এই বিষয়ে জানিয়ে দেয়। এরপর স্ক্যামাররা নিজেদের মাতৃভাষায় নিলকে গালমন্দ করতে থাকে। মাঝে মাঝে তাঁরা নিলের কাছে এসব ডেটা ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করে বলে, তাদের ডেটা ফিরিয়ে দিলে প্রতারণা ছেড়ে দেবে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles