
আমাদের কিশওয়ার ইমদাদের নানা অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেইন যে বড় শিক্ষাবীদ ছিলেন তা জানতাম। তবে এতটা নিবেদিতপ্রাণ এমন বড়মাপের ছিল তার শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধ তা জানা ছিলোনা। সেদিন এক দুপুরে জানলাম অধ্যক্ষ কন্যা দুররে সাহওয়ারের উত্তরার বাড়িতে কথপোকথনে। অধ্যক্ষ বাবার বই ‘স্মৃতিকণা’ দিলেন পড়তে।
আমি আশাই করিনি এমন সহজ সরল চলমান ভাষায় লেখা সেই ব্রিটিশ আমল,পাকিস্তান আমলে তার শিক্ষা নিয়ে নোয়াখালীর চৌহমনী কলেজকে দাঁড়া করানোর হাজারো স্মৃতি। বইটি সঙ্গে ব্যাগে রেখে ফাঁকে-ফাঁকে পড়তে লাগলাম। যতই পড়ছি বুঝতে পারছি তাঁর ধ্যানজ্ঞান কতটা নিবেদিত ছিলো শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে।
নিজের হাতে তৈরী চৌহমনী কলেজকে দাঁড়া করাতে। তিনি বিশ্বাস করতেন শিক্ষাই এমন আলো যে মানুষকে মানুষ করে তোলে।ধর্ম বর্ণ জাত পাত নিয়ে হানাহানি থেকে বিরত রাখতে পারে। ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে চরম ভয়াবহ নোয়াখালী দাঙ্গায় গান্ধীজী এসে তাই তাকে চিঠি লিখে ডাকিয়ে সঙ্গে কাজ করতে বলে ছিলেন।
তিনিও গান্ধীজীর সাথে দেখা করে যথাসাধ্য কাজ করে ছিলেন দাঙ্গা থামাতে। অধ্যক্ষ তাফাজ্জলকে হাতে লেখা সেই চিঠি এখন জাতীয় জাদুঘরে রয়েছে। ওনার স্মৃতিচারণ পড়তে পড়তে আমার মনে হলো সেল ফোনদিয়ে ওনাকে নিয়ে একটা ডকোমেন্টারী বানাই। অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইনের নাতী কিশওয়ার ইমদাদ শুনে বল্লেন-ওনার মত একজন ব্যক্তিত্বকে নিয়ে আপনার খেলার ছলে ডকোমেন্টারী ফিল্ম করা ঠিক হবেনা। হক কথা। বাংলাদেশে কিশওয়ার ইমদাদ ও একজন ক্ষমতাবান কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের মানুষ। তার এক ইশারায় নামী ডিরেক্টর এলেন,দামী ক্যামেরাম্যান এলেন। আজ শুরু হতে যাচ্ছে শুটিং। আমার শুভ কামনা রইলো। অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইনকে নিয়ে এই ফিল্ম যেন তাঁর শ্রেষ্ঠ জীবনের তথ্যনামা হয়ে থকুক। আমারতো আর উপাধী দেয়ার ক্ষমতা নেই তবে আশা করতে পারি যেন অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইনের নামের আগে শিক্ষকরত্ন শব্দটি থাকলে যথাযথ সন্মান হয়।
স্কারবোরো, কানাডা