
দেশের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক আনিসুল হককে সম্প্রতি কড়া জবাব দিয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আনিসুলের লেখায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে দিয়েছেন দীর্ঘ স্ট্যাটাস।
শনিবার (২ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে আনিসুল হকের সমালোচনা করেন লেখিকা। জানান, লেখকদের সম্পর্কে আনিসুলের অভিজ্ঞতার কথা প্রথম শ্রেণির একটি পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়। আর সেখানেই লেখিকাকে নিয়ে আনিসুলের লেখায় উঠে আসে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।
নেতিবাচকভাবে তসলিমাকে পাঠক সমাজে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তসলিমা। তার মতে, তসলিমার লেখা নয়, বিয়ে নিয়ে মেতে ছিলেন আনিসুল।
আফসোস করে তসলিমা লেখেন, লেখক আর্থার মিলার, চিত্রপরিচালক মার্টিন স্করসেসে বা জেমস ক্যামেরন এমনকি বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লেখালেখি করলে আনিসুল তার কাজের বিষয়টি নিয়েই মেতে উঠতেন। তাদের একাধিক বিয়ে নিয়ে কথা বলতেন না।
অথচ তসলিমাকে নিয়ে আনিসুলের লেখায় তসলিমার লেখার ধরন, কিংবা বইগুলো প্রাধান্য পায়নি। পেয়েছে তসলিমার একাধিক বিয়ে। এ প্রসঙ্গে তসলিমা ফেসবুকে লিখেছেন, তিনি তার (আনিসুল হক) লেখার শুরুতেই বিয়ের তালিকা দিয়ে আমাকে লেখক নয়, বরং ‘যাকে দেখি তাকেই বিয়ে করে ফেলি’ এমন একটি মাথা-খারাপ মেয়ে হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন।
তসলিমা আরও লিখেছেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোন পরিস্থিতিতে একটি মেয়ে বিয়ে করতে বাধ্য হয়, কোন পরিস্থিতিতেই বা তালাক দিতে বাধ্য হয়, তার উল্লেখ কিন্তু তার (আনিসুল হক) লেখাটিতে নেই।
আনিসুলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে তসলিমা লেখেন, আমার বিয়ে নিয়ে তার যদি এতই আগ্রহ, এ নিয়ে লেখার আগে তিনি আমার আত্মজীবনী একবার পড়ে নিলেই পারতেন। নাকি ভুলভাল মন্তব্য বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আর কারও বেলায় না করা গেলেও, আমার বেলায় করলে কোনও সমস্যা নেই?
আফসোস করে তসলিমা লেখেন,
আমার সম্পর্কে লেখার আগে আমার লেখা ৪৫টি বইয়ের একটিও পড়ে দেখার প্রয়োজন তিনি মনে করেননি। আমি যে মানুষ হিসেবে উদার, বিনয়ী, বন্ধুবৎসল, আমার সেন্স অব হিউমার ভালো, আমার লেখার ক্ষমতা ভালো, আমি সৎ এবং সাহসী, আমি বিপ্লবী, সংগ্রামী, আপোসহীন, এসব তার ( আনিসুল হক) চোখে পড়েনি। চোখে পড়েনি সমাজের মেয়েরা যে আমার লেখা পড়ে জেগে উঠেছে, সচেতন হয়েছে, সেসবের কিছুই।
ফেসবুক পোস্টের শেষে আনিসুল হককে উদ্দেশ্য করে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ঝেড়ে তসলিমা লেখেন,
পুরুষ-লেখক হলে এসব (লেখা ও ব্যক্তিগত গুণ) চোখে পড়ে। কারণ পুরুষ-লেখকরা তো লেখক, যৌনাঙ্গ নয়।