9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

একটি মোড়ক উন্মোচন

একটি মোড়ক উন্মোচন - the Bengali Times
কুমিল্লার একসময় শহরে হাতে গোনা যেকটি অভিজাত পরিবার ছিলো গাড়ী দোতলা বাড়ি প্রসস্থগেইট সব মিলিয়েই আভিজাত্য ছিলো ছিলো ব্যাপক পরিচিতি তেমনি একটি পরিবারেরই সন্তান শিখা

শিখা।ছোট্ট একটি নাম।পুরো নাম তাসরীনা করিম শিখা।দেখতে সুন্দরী।আলোক শিখার মতোই।অন্যদিকে কুমিল্লার একসময় শহরে হাতে গোনা যেক’টি অভিজাত পরিবার ছিলো।গাড়ী,দোতলা বাড়ি,প্রসস্থগেইট-সব মিলিয়েই আভিজাত্য ছিলো।ছিলো ব্যাপক পরিচিতি-তেমনি একটি পরিবারেরই সন্তান শিখা।

একটা সময় ছিলো যখন আমিও কুমিল্লা শহরে থেকেই সাংবাদিকতাসহ নানা কর্মকান্ডে জড়িত ছিলাম।সেসময় শিখা,অনেক ছোট।স্কুলের গন্ডী পেড়িয়ে কলেজে পা’রেখেছে।সঙ্গত কারনেই ঐবয়সের ছেলেদের দৃষ্টি তার দিকে।এদের মধ্যে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও ছিলো।তাদের অনেকের মধ্যে আবার তাকে নিয়ে প্রতিযোগিতাও হতো রীতিমত।ওর সাথে কথা বলতে পারলেতো বটেই।একটু দেখা কিংবা চোখাচোখি।হাসি বিনিময় হলেতো বর্তে যায়-এমনিতোর রমরমা অবস্থা শিখাকে ঘিরে।

- Advertisement -

সেসময়টিতেই আমার উপর দায়িত্ব বর্তায়,ইমেজ ফিল্ম সোসাইটির কুমিল্লা শাখার।কাজ ছিলো খুবই কষ্টসাধ্য।ফিল্ম সংগ্রহ, সিনেমা হল বুককরা, মেয়েদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা দেখা ইত্যাদি।তবে সবচাইতে গুরত্বপূর্ন এবং ঝামেলার বিষয়টি ছিলো সদস্য সংগ্রহ ।কারণ আমাদের শ্লোগান ছিলো রুচিশীল দর্শক,সৃজনশীল চলচ্চিত্রের পরিবেশ।এক্ষেত্রে যেনোতেন লোকজনকেতো আর সদস্য করা যায়না।বেছে বেছে বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষত্রে বাহ্যিক সৌন্দর্য ও পারিপার্শিকতাও প্রাধান্য দেয়া আবশ্যক ছিলো।সেসময় আমাদের যারা সদস্য-দর্শক ছিলেন তাদের নিশ্চই বিষয়টি মনে থাকার কথা।

তখন শিখাকে সদস্য করাটা নানা কারনেই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চলাটাই তখন আমাদের জন্য ছিলো নিত্যদিনকার বিষয়।শিখার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিলোনা।ওবাড়িতে তখন কবি,সাহিত্যিক,রাজনীতিক নেতাকর্মীর যাতায়ত ছিলো।তাদের বাসায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হতো।ফলে আমাদের সেবাসায় যেতে কোন বাঁধা ছিলোনা।তাছাড়া,শিখার ভাই পিয়াসও কবিতা লিখতো।সাংবাদিকতার সঙ্গেও জড়িত ছিলো।তখন,কুমিল্লার কৃর্তীসন্তান ঢাকায় কর্মরত সাংবাদিক ফেরদৌস আলম দুলাল ভাই আমাদের দু’জনকেই খুব পছন্দ করতেন।আমার এখনো মনে আছে,শেখ ফজলুল হক মনি,আমার সম্পাদক(তখন আমি বাংলার বাণী পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি) কুমিল্লা এসেছিলেন।তো দুলাল ভাই,আমাকে ও পিয়াসকে মনি ভাইয়ের কাছে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।সেসময় মনি ভাই উঠেছিলেন থমসন্ ব্রিজ এলাকায় ওয়াপদা গেষ্ট হাউজে।মনি ভাই,দু’জনকে দু’টি কলম দিয়েছিলেন।আর কলমের যথার্থ ব্যাবহারের কথা বলেছিলেন আমার সে কথা মনে স্থির হয়ে আছে।সেই মুহুর্তের কথা কখনো ভোলা যাবেনা।

যাই হোক,পিয়াসের উপস্থিতিতেই প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা শিখার সাথে।সদস্য করা।কাজটি এতটা সহজসাধ্য তা বন্ধুদের কাছে যেন বিস্ময়ের বিষয়।যাই হোক তারপরতো শিখার বিষয়কো ইতিহাস।শিখাকে পরীক্ষা দিতে সাহার্য করা থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী।অনেক ঘটনা,অনেক স্মৃতি।কুমিল্লার অনেকের মনে কষ্ট।কারো ‘ড্রিম প্রজেক্ট’ হয়ে শিখার ঢাকা অবস্থান।

তবে শেষ পর্যন্ত হুট করে শিখা বিয়ে করে প্রবাসী বরের সাথে কুমিল্লার স্বপ্ন ভেঁঙ্গে দিয়ে শুরু করে প্রবাস জীবন।আজ তা বহুবছর।তারপর শিখা কবিতা লিখে,বই প্রকাশ করে।ইতিমধ্যে তার নাতিনাতনীও হয়েছে।বড় হয়ে গেছে তারাও।ফলে ‘ড্রিম প্রজেক্ট ব্যার্থ।অতীত।

সেই শিখা এবার ঢাকা এসে তার লেখা তিনটি বই প্রকাশ করেছে।এ উপলক্ষে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।শনিবার ধানমন্ডি ক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান’৮১ ব্যাচ এর শিখার বন্ধুরা।শিখার বই তিনটি হলো ’ভালোবাসার অতীত নেই’ তার ইংরাজি অনুবাদ ‘Love Has No Past’এবং ‘ঘর বেঁধেছি নানা দেশে’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন,শিখার বড় বোন সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারপার্সন,দেশ টিভির নির্বাহী পরিচালক, সিনিয়ার এডভোকেট তৌফিকা করিম রেখা আপা।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রীত হয়ে আমি উপস্থিত ছিলাম। সেখানে অনেক বছর পর শিখার সাথেতো দেখা হলোই। আবেগঘন প্রাপ্তি ছিলো আমার মায়ের ফুপতো বোন,সাইফুন আরা,আমাদের বাচ্চি খালার সাথে দেখা হওয়া। সেইসাথ সেসময় কুমিল্লার ওনার সঙ্গী,আমার পরিচিতজন চিনু ফুপু(মোহ সিনা চিনু), মুকুল আপা ছাড়াও আমাদের শিরিন হোসেনের সাথে দেখা। সব মিলিয়েই সেই সময়গুলো মনে রাখার মতোই।

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles