
জঙ্গী গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া শামীমা বেগম আর যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারছেন না। নাগরিকত্ব ফিরে পেতে এবং দেশে ফিরতে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও তাকে বিমুখ করলো দেশটির সর্বোচ্চ আদালতও।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যে। কিন্তু আট বছর আগে ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে নিজের স্কুলের দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ায় যেতে পূর্ব লন্ডনের বাসা ছাড়েন তিনি।
এরপর সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন। সেখানে তার তিনটি সন্তান হয়। তবে সন্তানেরা কেউ বেঁচে নেই।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শামীমাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে পাওয়া যায়। ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গী গোষ্ঠি আইএস-এর সাথে যোগ দেবার কারণে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটিশ সরকার। এতে শামীমা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েন।
পরের বছর ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের একটি ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেন, শামীমা রাষ্ট্রহীন অবস্থায় নেই। কেননা তিনি ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন নাগরিক’। তার মা একজন বাংলাদেশি।
গত বছর শামীমা যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে (এসআইএসি) ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হেরে যান। কমিশন জানায়, শামীমাকে জঙ্গি সংগঠনটিতে নিয়োগ দিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে নিয়ে যাওয়া ও পরে যৌন নির্যাতনের জন্য সিরিয়ায় রেখে দেয়ার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য সন্দেহ রয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিদ তার নাগরিকত্ব কেড়ে না নিয়ে পারেননি।
এরপর সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের আপিল আদালতে মামলা করেন শামীমা। গত মাসে মামলার রায় দেয় আদালত।
রায়ে জানানো হয়, আইনগতভাবেই শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল ব্রিটিশ সরকার এবং বর্তমানে সিরিয়ায় বসবাসরত শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্যে ফেরত আসার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। এরপর সর্বোচ্চ আদালতে যান শামীমা। সেখানেও তাকে হতাশ হতে হলো। ফলে যুক্তরাজ্যে আর ফেরা হচ্ছে না তার।