
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় ১৬ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চন্ডিপুরের ভিআইপি মোড় থেকে অপহৃত হন ওই কিশোরী। বর্তমানে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের ইব্রাহিম সরদার দুদুল (২০), তুষার মাঝি (২২), সুরেশ্বর গ্রামের নাহিদ হাওলাদার (১৯) ও শাকিব হোসেন (২০)।
থানায় মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে নানী বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন ওই কিশোরী। চন্ডিপুরের ভিআইপি মোড়ে পৌঁছালে অভিযুক্ত ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি তাকে অপহরণ করে অটোরিকশা যোগে সুরেশ্বর দরবার শরীফের কাছে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে ওই পরিত্যক্ত ঘরটিতে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শনিবার সকালে নাহিদ হাওলাদার, শাকিবসহ অজ্ঞাতরা সেখানে যায়। পরে তারা সবাই মিলে আবার পালাক্রমে ধর্ষণ করে। দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে ইব্রাহিম সরদার দুদুল তাকে সুরেশ্বর দরবার শরীফের সামনে থেকে অটোরিকশায় তুলে দেয় এবং ঘটনা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বাড়ি ফিরে ওই কিশোরী তার বোনদের কাছে ঘটনা খুলে বলে। শনিবার রাতেই থানায় গিয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত তিনজনকে আসামী করে একটি মামলা করে পরিবার। এরপর শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে রোববার দুপুরে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী বলেন, ঈদের দিন হেঁটে নানার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। তখন দুদুল ও তুষার মাঝি আমাকে মুখ চেপে ধরে অটোরিকশায় সুরেশ্বর দরবার শরিফের কাছে একটি ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ধর্ষণ করে। শনিবার সকালে আরও তিনজন আমাকে ধর্ষণ করে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি অটোরিকশায় আমাকে পাঠিয়ে দেয়।
ওই কিশোরীর বড় বোন বলেন, আমার বোনকে অপহরণ করে যারা খারাপ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি শনিবার রাতে থানায় অপহরণ ও দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছি। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার লিমিয়া সাদিনা বলেন, ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।