
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় দুলাভাইকে গুলি করে শটগান নিয়ে থানায় গিয়ে হাজির হয়েছেন জাসফিকুর রহমান অশ্রু নামে এক যুবক। এসময় থানার ডিউটি অফিসারকে তিনি বলেন, আমি দুলাভাইকে গুলি করে খুন করেছি। আমাকে কী করবেন করেন।
পুলিশ এ কথা শুনেই অবাক। তাকে থানায় রেখে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। ততক্ষণে গুলিবিদ্ধ ফারুক আহমেদকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দারুস সালাম থানার কোটবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, তারা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, পারিবারিক কলহের জেরে শ্যালক জাসফিকুর গুলি করে ফারুককে খুন করেছেন। শটগানটি জাসফিকুরের মা জাহানারা বেগমের নামে লাইসেন্স করা। আনুমানিক ২০ বছর আগে এটি তার নামে নেওয়া। তার স্বামী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের নামেও লাইসেন্সকৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ২০১৮ সালে তিনি মারা যাওয়ার পর আইন অনুযায়ী সেগুলো জমা দেওয়া হয়েছে। জাহানারা বেগমের নামে লাইসেন্স করা শটগানটি তার শয়নকক্ষেই থাকত।
জাসফিকুরকে আটক করেছে পুলিশ। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
নিহত ফারুকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফারুক ইট-বালুর ব্যবসা করতেন। থাকতেন শ্বশুর বাড়িতে। পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। তার স্ত্রীর দুই বোন ও এক ভাই রয়েছেন। একমাত্র ভাই জাসফিকুর পড়ালেখা শেষ করে চাকরি খুঁজছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার দুপুর ১টার দিকে জাসফিকুর ও তার মা জাহানার বেগম দারুস সালাম থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে আসেন। জাসফিকুরের হাতে তখন শটগান। প্রথমে জাহানারা বলেন, অস্ত্রটি তার নামে লাইসেন্স করা। এটি থানায় জমা দেবেন। এরপরই জাসফিকুর দুলাভাইকে হত্যার কথা জানান পুলিশকে।
দারুস সালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন বলেন, নিহত ফারুক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসাতেই ছিলেন। এ সময় দোতলা থেকে শটগান এনে জাসফিকুর তার বুকে ঠেকিয়ে একটি গুলি করেন। জাসফিকুর যখন থানায় আসেন, তখন শটগানে একটি গুলি ছিল।
তিনি আরও বলেন, অস্ত্রটি জাসফিকুরের মায়ের নামে লাইসেন্স করা। সেটি জব্দ করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত ফারুকের মামা আইয়ুব আলী জানান, ফারুকের শ্বশুরবাড়িতে পারিবারি দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জেরেই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা তার।