শুভ জন্মদিন স্বপন।দীর্ঘজীবী হও। ৯ মে কিংবা ১৩মে গুলিয়ে ফেলেছি তোমার জন্মদিন। তবে মের এই সময়।
সাদাকালো ছবিটি পাকিস্তনী কালের শেষ বছরের। ১৯৭০ সাল। দক্ষিণ বাংলার হাতিয়া,সন্দীপ,চর আলেকজান্ডার,ভোলা সহ সব দ্বীপে প্রলয়ংকরী জলচ্ছাস ও প্রচন্ড ঝড়ে লন্ডভন্ড।হাজারে হাজার মানুষ ও পশুর গেছে প্রাণ। জল উঁচু হয়ে বড় গাছের ডগায় মানুষ আর পশুর লাশ আঁটকে দিয়ে চলে গেছে। অল্প কিছু বেঁচে থাকা মানুষের খাদ্য নেই,পানি নেই। চারদিকে লাশের পঁচা গন্ধ। রিলিফ নিয়ে যাচ্ছে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (হক-তোহা)কনিষ্ঠ সদস্যা হিসাবে আমিও যাচ্ছি কমরেড সিদ্দীক ওরফে বাঙালি পাঠানের টিমে।
কবি সাংবাদিক বন্ধু কাজী রফিকও তখন একই দলে ছিলো। ইউরোপ,সেন্ট্রাল আমেরিকার অনেক সাংবাদিক ও টিভি কর্মী বোঝাই জাহজ হাতিয়ার দিকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিচ্ছে।
তখনি পরিচয় হয়ে ছিলো আজকের স্বনামধন্য কবি স্বপন দত্তের সাথে। এরপর থেকে আমারা বন্ধু। আমার চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকা আবার ঢাকা ছেড়ে টরন্টো শুধু দূরত্ব বাড়িয়েছে,দেখা সাক্ষাৎ কমিয়েছে।হৃদয়ের ডিপ ফ্রিজারে স্বযত্নে স্বপন ও বন্ধুত্ব ঠিকই রাখা আছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরপরই চট্টগ্রামে ‘স্পার্ক জেনারেশান’ সাহিত্য আন্দোলন কাঁপিয়ে তুলে ছিলো দেশের গোটা সাহিত্য অঙ্গণ। ভঙ্গুর সাহিত্য জগত কেঁপে উঠে ছিলো।
স্পার্ক আন্দোলনের হোতা তাত্বিক ছিলো স্বপন দত্ত সঙ্গে আর্থিক ব্যাপারে পরিকল্পনায় মতামত দিতে ছিলেন গল্পকার হেনা ইসলাম,গ্রাফিক মানে আঁকা ঝোকায় আমি,কবি খুরশীদ আনোয়ার,কবি সাংবাদিক কাজী রফিক ও কবি শিশির দত্ত ছিলেন স্পার্ক আন্দোলনে স্বপনের প্রাথমিক সঙ্গি। * জাহাজের ডেকে এক দিকে সাদা টুপি হাতকাটা কালো জ্যাকেট পরে আমি দাঁড়িয়ে আছি। অন্যদিকে এক পা রেলিং এ তুলে দিয়ে কাঁধে শোয়েটার পেঁচিয়ে স্বপন দত্ত দাঁড়িয়ে। সাগরের উত্তাল বাতাসে তার ঘন চুল ভীষণ উড়ছিলো তখন।