আপনি যদি ব্রাসেলস থেকে বাইরোডে লুক্সেমবুর্গ যান, তাহলে বেলজিয়াম বর্ডার পার করেই লুক্সেমবুর্গ ঢোকার শুরুতেই ছোট একটি গ্রাম পড়বে , সে গ্রামটির নাম রাস্তার পাশে সাইনবোর্ডে দেখতে পাবেন, “Sterpenich”. ওদের ভাষায় এর উচ্চারণ হচ্ছে স্টারপুনিক। এর মানেটা একটু অন্য রকম। সেটি হলো, ” এখানে কারোর মৃত্যু হয় না” .আমি বিভিন্ন দেশে গেলে এই জাতীয় একটু different নাম দেখেলে আমার কৌতূহল জাগে।
অনেক অনেক দিন আগে একবার আমেরিকার কোনো এক হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলাম, হটাৎ চলতে চলতে রাস্তার পাশে একটি নদী দেখি, নদীটির নাম ছিল, “The river of sorrow” অর্থ্যাৎ দুঃখের নদী। খুব জানতে ইচ্ছা করছিলো কেন ওই গ্রামের নাম Sterpenich বা এখানে কারোর মৃত্যু হয় না” রাখলো, অথবা কেন “The river of sorrow” বা দুঃখের নদী নাম রাখলো।
বিভিন্ন জায়গার নামের সাথে অনেক সময় সুন্দর সুন্দর গল্প থাকে, তাই ওদের ইতিহাস জানতে পারলে ভালো লাগতো। যেমন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার “ভুতের গলি”.
ওই এলাকাতে কোনো ভূত ছিল না তথাপি কেন ভূতের গলি হলো। শোনা যায় পূর্বে ওখানে এক ইংরেজ সাহেব বাস করতেন। নাম তার মিস্টার বুথ। ওই এলাকায় তিনিই ছিলেন প্রথম কোনো ইংরেজ সাহেব। তাই তার নামানুসারে জায়গাটির নাম হয়েছিল বুথের গলি। কিন্তু কালানুক্রমে বুথের গলি ভূতের গলিতে পরিণত হলো। ইন্টারেষ্টিং বটে।
আমি জোক করে আমাদের গাইডকে বলেছিলাম এই জায়গাতে কেউ যদি নাই মরে তাহলে তো কোনো কবরস্থান থাকবে না, এবং সারা পৃথিবীর মানুষ অমরত্বের খোঁজে ওখানে এসে ভিড় জমাবে ! বাস্তবে সেটি নয় খুবই সীমিত বসতির একটি গ্রাম, সেখানে কবরস্থানও আছে এবং মানুষ ঠিকিই মরে, কিন্তু কেন “Sterpenich” বা No one dies here নাম হলো জানতে পারলে ভালো লাগতো। লুক্সেমবুর্গ শহরে বিষয়টি খুঁজে দেখার মত সময় ছিল না তাই অজানাই রয়ে গেলো।
সঙ্গের ছবিটি আমাদের গত ৩ তারিখে ব্রাসেলস থেকে লুক্সেমবুর্গ যাওয়ার পথে বাস থেকে তোলা।
টরন্টো, কানাডা