9.7 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ডেটিং অ্যাপে বান্ধবীকে বিক্রি করে দিলেন আরেক বান্ধবী

ডেটিং অ্যাপে বান্ধবীকে বিক্রি করে দিলেন আরেক বান্ধবী - the Bengali Times
ভুক্তভোগী বান্ধবী

রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী বেশ কয়েকদিন ধরে লক্ষ করছেন, বাসা থেকে বের হলেই আশপাশের কিছু মানুষ তার দিকে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারপরও তিনি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছিলেন। একদিন উত্তরায় রিকশায় যাচ্ছিলেন তিনি। রাস্তায় অপরিচিত এক ব্যক্তি তার নাম ধরে ডাকতে থাকেন। চিৎকার করে বলেন, এই মেয়ে কেন এমন করলে আমার সঙ্গে। আমার কাছে রুম ডেটের কথা বলে অগ্রিম টাকা নিয়ে তারপর আমাকে ব্লক করে দিলে। সেই ব্যক্তির কথা শুনে অবাক হন ওই শিক্ষার্থী।

ঘটনার কয়েকদিন পর তার পরিচিতরা তাকে ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানের একটি আইডির স্ক্রিনশট পাঠায়। সেখানে মাহি নামের একটি অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করা হয়েছে তার ছবি। সেই ডেটিং অ্যাপসের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। আর এসব কিছুই করেছে তারই কাছের এক বান্ধবী। সেই বান্ধবীর নাম মোছা. সামিয়া।

- Advertisement -

শিক্ষার্থী জানান, সামিয়া এসব অ্যাপসে নিজের ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। রুম ডেটের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার; এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও নিয়েছে কারও কারও কাছ থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ বাজারও নিয়েছে।

নিজের ছবিতে যখন আর কাজ হচ্ছিল না, তখন বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু করে সামিয়া। রুম ডেটের জন্য বিকাশে টাকা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেয়। অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অডিও ও মেসেজের তথ্য রয়েছে । একটি অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, তুমি তো শুধু মাছ আর গোশত কিনে দিলে। তেল, লবণ কেনার জন্য আরও ৫ হাজার টাকা পাঠাও। তারপর রুম ডেটে যাব।

বান্ধবীর দ্বারা এমন হেনস্তার শিকার হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন সেই শিক্ষার্থী। বান্ধবীর নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কাছের বান্ধবীর এমন আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। বান্ধবী হয়ে আমার এত বড় ক্ষতি করল! আমি এই ঘটনার বিচার চাই। তার দ্বারা যেন অন্য কেউ আর প্রতারিত না হয়।

এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সামিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলেও কোনো উত্তর মেলেনি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ করার পরই নিজের ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করে দিয়েছে সামিয়া। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী বলেন, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির নারী প্রতারক চক্র পুরুষদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের সচেতন হতে হবে। যে কোনো অ্যাপসে অ্যাকাউন্ট করার পর কোনো নারী সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে টাকা পাঠালে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

 

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles