
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর তার স্ত্রী জামিলেহ আলমোলহোদার বিষয়ে অনেকেই জানতে আগ্রহী। ১৯৬৫ সালে ইরানের দ্বিতীয় জনবহুল শহর মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন জামিলেহ। তিনি শহীদ বেহেস্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। যদিও নারী শিক্ষা, অধিকার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার বক্তব্য পশ্চিমা দুনিয়ায় অনেকবারই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
১৮ বছর বয়সে রাইসির সঙ্গে বিয়ে হয় জামিলেহ’র। তাদের সংসারে দুটি মেয়ে। জামিলেহ একবার বলেছিলেন, নারীদের বাইরে কাজ করা ও পড়ালেখা করতে চাওয়া এক ধরনের সহিংসতা। তিনি চান না নারীরা বাইরে কাজ করুক।
২০২৩ সালের জুনে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তেলেসুরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জামিলেহ বলেন, স্বাধীনতার নামে বিভিন্ন দেশের সরকার নারীদের যৌন হয়রানি করে। অধিকার সংস্থাগুলো নারীদের ঘরে অত্যাচারিত হওয়া নিয়ে কথা বলে। কিন্তু পরিবারের বাইরে নারীরা যে সহিসংতার শিকার হয় সেগুলো আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
জামিলেহ বলেন, ‘আমরা চাই নারীরা নারীই থাকুক। আমরা কেন পুরুষদের মতো হব? কেন আমাদের পড়ালেখা করতে হবে? পুরুষদের মতো কাজ ও জীবনযাপন করতে হবে? এটি এক ধরনের সহিংসতা।’
নারীদের হিজাব পরার পক্ষে সবসময় অবস্থান নিয়েছেন জামিলেহ। ২০২৩ সালে ইরানে হিজাব আইন আরও কঠোর করা হয়। ওই সময় আইন করা হয় নারীরা হিজাব না পরলে আরও বেশি দিন কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হবে।
তখন প্রেসিডেন্ট রাইসির স্ত্রী বলেন, ‘সব জায়গায় ড্রেস কোড আছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুলেও আছে। আমি বলতে চাই হিজাব একটি ঐতিহ্য। ধর্মীয়ভাবে বাধ্যতামূলক একটি ঐতিহ্য, যা অনেকে মানেন। গত কয়েক বছর ধরে হিজাব পরা আইনে পরিণত হয়েছে। আর আইনভঙ্গ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখোর স্ত্রী ব্রিগেট ম্যাঁখোকে ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি চিঠি লিখেছিলেন জামিলেহ। চিঠিতে তিনি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য তার স্বামীকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘দয়া করে ফ্রান্সের নারী, মা ও মেয়েদের প্রতিনিধি হিসেবে আপনার স্বামীকে বলুন তিনি যেন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত না হন।’ কিন্তু তিনি জানতেন না ব্রিগেট ম্যাঁখো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইসরায়েল সফর করেন এবং দেশটির সরকারের প্রতি সমর্থন জানাতেই গিয়েছিলেন।