
প্রেমিকের রয়েছে অগাধ সম্পত্তি। তাই তা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি আটেন প্রেমিকা। এজন্য করেন নিখুঁত পরিকল্পনা। অর্থের লোভে প্রেমিককে বিষ খাইয়ে হত্যা করেন প্রেমিকা। তবে এরপর যা ঘটেছে তাতে হতবাক প্রেমিকা নিজেই। সম্প্রতি পিপলস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টিভেন অ্যাডওয়ার্ড রাইলি নামের ওই প্রেমিক নিজেকে তিন কোটি মার্কিন ডলারে মালিক বলে দাবি করতেন। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫২ কোটি টাকা। বিষয়টি বিশ্বাস করেন তার প্রেমিকা। তবে বিপত্তি ঘটে অন্য জায়গায়। প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানতে যাচ্ছিলেন প্রেমিক। ফলে সম্পত্তি হাতানোর জন্য তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন তিনি।
প্রেমিকার ধারণা, প্রেমিককে হত্যা করলে তার বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া যাবে। এজন্য বিষ খাইয়ে তাকে হত্যা করেন তিনি। পরে জানতে পারলেন, তার কিছুই নেই। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটায় এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
তদন্তে দেখা গেছে, ওই প্রেমিকের বাস্তবে এমন কোনো সম্পদই ছিল না। আর থাকলেও তার ভাগ পেতেন না প্রেমিকা। কেননা আইনানুসারে তিনি স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃত নন। প্রেমিককে হত্যার দায়ে গত বছরের অক্টোবরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত বুধবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। দোষী সাব্যস্ত হওয়া ওই প্রেমিকার নাম ইনা থিয়া কেনোয়ার।
খাবার দিতে অস্বীকৃতি, স্ত্রীকে টুকরো টুকরো করলেন স্বামী
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরে রাইলি বন্ধুদের নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তার বিশ্বাস যে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাই বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পথিমধ্যে তার পেটে ব্যথা শুরু হয়। ওই সময় তাকে মদ্যপ দেখাচ্ছিল। তবে রক্ত পরীক্ষায় মদের আলামত মেলেনি।
রাইলির প্রেমিকা দাবি করেন, তিনি হিটস্ট্রোক করেছেন। বাসায় গিয়ে বিশ্রাম করলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। নিজের মেডিকেল প্রশিক্ষণ রয়েছে বলেও দাবি করেন প্রেমিকা। তবে তদন্ত কর্মকর্তারা তার বাড়িতে বিয়ারের বোতল ও মগে সবুজ তরল পানীয় খুঁজে পান। প্রেমিকার শোয়ার ঘরেও একই তরলের প্রমাণ মেলে। পরে নমুনা পরীক্ষায় এতে ইথিলিন গ্লাইকলের উপাদান মেলে।
এরপর ওই প্রেমিকের মরদেহ পরীক্ষা করলে তাতেও একই উপাদান পাওয়া যায়। তবে প্রেমিকার দাবি, রাইলি সারা দিন মদপান করেন এবং হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এজন্য বেশকিছু যুক্তিও হাজির করেন তিনি। এমনকি নিজেকে তার কমন-ল (অনানুষ্ঠানিক বিয়ে) স্ত্রী দাবি করেন। তদন্তকারীরা জানান, তিনি রাইলির স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন না। এতে প্রেমিকা মুষড়ে পড়েন। এ ছাড়া প্রেমিকের কোনো বিশাল সম্পদের তথ্যও পাননি তদন্ত কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেষ পর্যন্ত নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন প্রেমিকা। তিনি জানান, আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে প্রেমিকের চায়ে ইথিলিন গ্লাইকলের উপাদান মিশিয়ে দেন। এ মামলায় আগামী ১৪ আগস্ট রায় ঘোষণা করবেন আদালত।