
যশোরের মণিরামপুরে অরণ্য মণ্ডল (১৮) নামের এক কলেজছাত্রের গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) রাতে উপজেলার পলাশী গ্রাম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অরণ্য উপজেলার পলাশী গ্রামের অশোক মণ্ডলের ছেলে। তার মা জোসনা মণ্ডল স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
অরণ্য পলাশী আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিজ ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অরণ্যকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মৃত্যুর আগে অরণ্য নিজের ফেসবুকে পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘অতঃপর তুমি একদিন টের পাবে আমাকেই তোমার দরকার ছিল সবচেয়ে বেশি! তুমি টের পাবে আমার মতো ভালোবাসা কেউ দিতে পারেনি তোমাকে! তুমি টের পাবে এই মানুষটা থাকলে তোমার জীবনে অশান্তি আর থাকত না!’
‘তুমি বহু কিছু টের পাবে, আমার অনুপস্থিতি তোমাকে অনেক কিছু উপলব্ধি করাবে! তখন আমরা একসাথে আর থাকব না, তুমি আমাকে আর পাবে না! আমি থেকে যাব তোমার দীর্ঘনিঃশ্বাসে! এইভাবে কি থাকার কথা ছিল? ছিল না তো! একটু তোমার সাথেই তো আজীবন থাকতে চেয়েছিলাম! রাখতে পারতে চাইলেই! তখন হয়তো এত বুঝতে চাওনি, ব্যাপার নাহ! আমিও এখন বুঝি দাম দিতে গেলে নিজেরই দাম কমে যায়!’
পলাশী আদর্শ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘অরণ্য আমাদের এলাকার ছোট ভাই। এক বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের এক মেয়ের সাথে তার ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে প্রেম হয়। মেয়েটির সাথে মাঝেমধ্যে মনোমালিন্য হলে নিজের ফেসবুকে হতাশামূলক পোস্ট দিত অরণ্য। সম্প্রতি তাকে ডেকে বুঝিয়েছি।
মেয়েটির সাথে অভিমানে অরণ্য আত্মহত্যা করতে পারে।’
পলাশী-বাসুদেবপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, ‘অরণ্য দুপুরের খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও সে ঘর থেকে বের হচ্ছিল না। এরপর পরিবারের লোকজন জানালা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে অরণ্যকে ফ্যানের সাথে ঝুলে থাকতে দেখে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে মণিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘লেখাপড়া নিয়ে মায়ের সাথে মনোমালিন্যের কারণে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। তার লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আছে।’