
আমার ১৫/১৬ বছর বয়সের ছেলে স্কুল থেকে এসেছে আমি ও ঘর থেকেই টের পেয়েছি। বেশ কিছুক্ষন সাড়া শব্দ না পেয়ে আমি এ ঘরে এলাম। তাকে দেখে অবাক হলাম। জামা কাপড়া না ছেড়ে ফ্লোরে বসে এক মনে কি যেন করছে। স্কুলের ব্যাগটি তার বাম পাশে মাটিতেই গড়াগড়ি যাচ্ছে। আমাকে দেখার পর দেখলাম তার মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। দেখলাম সে তার ডান পা এর বড়ো আঙ্গুলের নখ ডাত দিয়ে ছিড়ছে।
আমি স্বাভাবিক তারপরও সে আমাকে স্বাভাবিক করার লক্ষে বললো- জানো বাবা আমি ডান পায়ের আঙ্গুলের নখ কাটতে পারি কিন্তু অন্য পায়ের পারিনা। আমি ফিরে গেলাম তার শিশুবেলায়। তখন তার বয়স ৪/৫/৬ মাস। বিছানায় শোয়া শিশুটির খেলার সাথী তার ডান পায়ের বড় আঙ্গুল। দুহাতে ধরে ওটা মুখে পুরে চুষছে। যতবার ছাড়াই ততবারই অবলীলায় ধরে মুখে পুরছে। আমি দেখি পেটে অসুখ হবে এমন অজানা আশঙ্কায় তা তার হাত থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। বিরামহীনভাবে এটা চলতো।
এতোক্ষন আমি যেন একটা ছোট্ট ছবি দেখলাম মনের আয়নায়্ ছেলেকে বললাম-তুমি যখন খুবই ছোট ছিলে মানে একেবারে শিশু তখন শোয়া অবস্থায় দুই হাত দিয়ে ডান পা ধরে বড়ো আঙ্গুলটি মুখে পুরে দিতে। যতবার ছাড়িয়েছি ততবারই একই কাজ তবে বা পা কখনই ধরতে না তাইতো এখনও ডান পায়ের আঙ্গুলটি মুখে দিতে পারো। এসবতো তার মনে পড়বে না তাই নিরবে আমার কথা শুনছে। বলালাম নেইল কাটার ব্যবহার করো যেটা কর সেটা ঠিক নয়।
এটাও তার একটা আইডেন্টিটি। তার ডান হিপ জয়েন্ট টি এখনও অনেক মোবাইল রয়েছে শিশুকালের ঐ ঘটনার জন্য কিন্তু বাম হিপ জয়েন্ট স্বাভাবিক। এ স্মৃতি আমাকে ২০/৩০ বছর আগের দিনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আজ রোববার এই শহরের আকাশ জুড়ে কালো মেঘ, সাই সাই বাতাস আর টিপ টিপ বৃষ্টি। এক কাপ চা আর স্মৃতি এখন সময়ের সাথী।
ইয়েলো নাইফ, কানাডা