
হায়াসিন্থ আর টিউলিপ ফুল দিয়ে শুরু হয় আমাদের বাগান মৌসুম। কয়েক বছর আগে প্রায় ২৫০ টিউলিপ বাল্ব দিয়ে শুরু করেছিলাম আমাদের টিউলিপ গার্ডেন। সেই কবে একবার অটোয়া গিয়েছিলাম সিলসিলা মুভির মত টিউলিপ গার্ডেন দেখে, তখন থেকেই শুরু হয়েছিল টিউলিপ গার্ডেন এর স্বপ্ন।
কয়েক বছরেই টিউলিপ বাল্ব কমতে কমতে প্রায় নাই হয়ে গিয়েছিল।
গতবছর আবার ১৫ প্যাকেট বাল্ব কিনে নিলাম হোম ডিপো থেকে, প্রতি প্যাকেটে ১৫ থেকে ৩০ বাল্ব ছিল – একেবারে শেষ মুহূর্তে কিনেছিলাম যখন তখন মূল্যছাড় ছিল, অর্ধেক দামে সবগুলো।
বাগান করা আসলে এক বিরাট ব্যয়বহুল শখ! বিশেষ করে আমাদের মত সাধারণ মানুষের জন্য, যাদের আবার নিজের কোন জায়গা জমি নাই। কর্পোরেশনের জায়গায় বিভিন্ন প্রতিকূলতা নিয়ে বাগান করি।
টিউলিপ বাল্ব কিনে এবার আয়োজন ছিল বাল্ব লাগানো। এত্তোগুলো লাগানোর জন্য কিনলাম এক Auger bit, বাসায় তো ড্রিল মেশিন আছেই। কিন্তু সেই bit আমার ড্রিল মেশিনে কাজ করবে না।
চাই Hammer Drill, ভাগ্য এবারও সহায়। Princess Auto তে ৬০% অফ পেয়ে গেলাম Hammer Drill, ব্যাটারী চালিত নয়, ক্যাবল সিস্টেম, যেমনটা চাইছিলাম।
কিনলাম Extended Cable, কন্ট্রাক্টর গ্রেডের – ড্রিল মেশিন চালানোর জন্য।
শীতের রাত শুরু হয় বিকেল সাড়ে চারটা – পাঁচটায়। কাজ থেকে ফিরতে ফিরতেই সন্ধ্যা। তাই মাগরিবের নামাজের পর বসেছিলাম বাসার সামনে টিউলিপ বাল্ব লাগানোর কাজে। এর জন্য দরকার ছিল আলোর, সেটাও ব্যবস্থা হলো হ্যালোজেন লাইট কেনার মাধ্যমে।
বাগান মালিনীকে নিয়ে শুরু করলাম বাল্ব লাগানো। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ড্রিল দিয়ে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে বাল্ব লাগানো শেষ।
কিন্তু শেষ হইয়াও হইলনা শেষ। কারো একজনের বাগানে দেখেছিলাম মাটির উপর নেট লাগিয়ে দিয়েছে, যেন কাঠবিড়ালি টিউলিপের বাল্ব তুলে খেয়ে না ফেলতে পারে। আমরাও মাটিতে বিছিয়ে দিলাম নেট, মাটির উপর।
অবশেষে শীতের বরফযুগ পেরিয়ে ফিরে এলো বসন্ত। বাগানে ফোটা শুরু করলো টিউলিপ।
বাসার পাশ দিয়ে যে ই যায়, একটু থেমে ছবি তুলতে ভুল করে না।
আমিও তুললাম। আমাদের টিউলিপ বাগানের খন্ড খন্ড চিত্র! সুবহানআল্লাহ!!!
শেষ বিকেলের ছবি।
ব্রাম্পটন, অন্টারিও, কানাডা