
ভারত বা যে কোন দেশের সাথেই বাংলাদেশের পরাজয়ে আমি ব্যথিত হই ঠিকই কিন্তু কখনই অসম্মানিত বোধ করি না। সেদিন নেপালের সাথে বিজয়ের পর আমার অফিসে ভারতীয় কলিগরা আমাকে অভিনন্দন জনিয়েছেন। আমি প্রথমে বুঝতে পারি নি কেন ওরা হঠাৎ করে অভিনন্দন জানাচ্ছিল। তবে সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝলাম ক্রিকেট নিয়ে কথা বলছে ওরা। আমি মুচকি হেসে ধন্যবাদ দিলাম। আগামী সোমবার যখন অফিসে যাব তখন হয়তো ওরা মুচকি হেসে আমাকে মিছে সান্তনা দিতে আসবে!
কিন্তু কথা হলো জয় পরাজয়কে জীবন মরণ সমস্যা হিসেবে কখনোই দেখা উচিত নয়। খেলাধুলায় অংশ নিতে হয় শরীর মন ভাল রাখার জন্যে। অথচ কোন খেলায় অংশ নিয়ে যদি সেই শরীর মনই নষ্ট হয়ে যায়, মান সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সেই খেলায় অংশ না নেয়াই ভাল।
যে কোন খেলায় হার জিৎ থাকবে। হারা যদি অসম্মানজনক হতো তাহলে পৃথিবীতে খেলাধুলা থাকতো না, এমনকি নির্বাচনের কথাও যদি ধরি, জয়ী হয় মাত্র একজন, পরাজিত হয় কয়েকজন। তাহলে সারা দেশের পরাজিত লক্ষ লক্ষ লোক অসম্মানিত হতে কখনো নির্বাচনে অংশই নিত না। অবশ্য আমি ফেয়ার নির্বাচনের কথা বলছি এখানে। যাইহোক জয় পরাজয় দুটোই অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা এবং স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে। আজকাল মানুষ শুধু জয় চায় বলেই পৃথিবীটা ক্রমেই নরকের মত হয়ে উঠছে। যে কোন কিছুতে জয়ী হতেই হবে, পরাজিত হলে মান সম্মান সব শেষ, জীবন শেষ অতএব ধরো অস্ত্র করো যুদ্ধ! এরকম মনোভাব হলে কোনভাবেই আমরা পরবর্তী প্রজন্মের বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে পারবো না।
তবে কন্টিনিয়াস ডেভলপমেন্ট বলে একটা কথা আছে। আজকের বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলা দেখে আমার মনে হয়েছে বোলিং, ফিল্ডিং এবং ব্যাটিং সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের আরো অনেক উন্নতি করার সুযোগ বা অবকাশ রয়েছে। সেটা অর্জন করতে হলে অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডকে রাজনৈতিক বা পারিবারিক স্বজনপ্রীতির উর্ধে থেকে ঢেলে সাজাতে হবে।
আজ পরাজিত হলেও আগামীতে বাংলাদেশ আরো অনেক ভাল করবে বলে আমার দৃঢ বিশ্বাস। যে কোন পরিস্হিতিতেই হোক, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।
স্কারবোরো, কানাডা