
সিলভিয়া প্ল্যাথের জীবনকাল ত্রিশ বছরের। লেখক-জীবন মাত্র বছর তিনেকের। অধিকাংশ বই-ই প্রকাশিত হয়েছে ১৯৬৩ সালে তাঁর আত্মহত্যার পর। মৃত্যুর প্রায় ত্রিশ বছর পর দ্য কলেক্টেড পোয়েম কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি কবিতায় মরণোত্তর পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন।
কানাডায় আসার পর ক্রমে ক্রমে আমার পাঠ-পরিক্রমা নতুন রূপ পরিগ্রহ করেছে। এখন আমার সংগ্রহের অধিকাংশ বই-ই কানাডার সাহিত্যের। হাজার পেরিয়েছে কয়েক মাস আগেই। বাংলা সাহিত্যের ইংরেজি অনুবাদের সংখ্যা শ চারেক। এছাড়া কিছু আছে মহাভারত, চৈতন্যদেব, হিন্দুধর্ম-দর্শন নিয়ে। অল্প কয়েকটি রবীন্দ্রনাথ নিয়েও আছে। কিন্তু ইংরেজি সাহিত্য বা আমেরিকান সাহিত্যের বই ঘরে নেই বললেই চলে।
গতবছর আমাদের প্রিয় মানুষ রেশমা মজুমদার শম্পা আপা ইউরোপ ভ্রমণে গেলেন। ফিরে আসার সময় হাতে করে নিয়ে এসেছেন দুঃখী কবি সিলভিয়া প্ল্যাথের এরিয়েল। প্ল্যাথের কবিতার বই উপহার পেলে আমি যে অনেক খুশি হবো সেটা ডাক্তার আপাটি কী করে বুঝলেন! নাকি ডাক্তাররা রোগ বোঝার সাথে সাথে এটিও বুঝে ফেলেন কে কোন বই পেলে আনন্দিত হয়!
সে সময় পর্যন্ত প্ল্যাথের বই বলতে কবিতাই বুঝি। কখনই খেয়াল করিনি তাঁর রয়েছে একটি উপন্যাস। মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগে দ্য বেল জার নামে প্ল্যাথের আত্মজীবনীমূলক এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। গতকাল কী ঘটনাচক্রে বইটি আমার ঘরে এলো। আমাদের চারপাশের চলমান যে ঘটনাচক্র, সেও কিন্তু এমনই শক্তিমান।
তিনি টের পান, কোন মানুষকে কোন বইটা দিলে মানুষটি আনন্দে নেচে উঠবে। আর আমার ভাগ্য এমনই যে প্রতি সপ্তাহেই আমি এক-দুইটা করে এমন বই হাতে পাই, যেটি পেলে, পড়লে, ঘরে আনলে আমার ঘর আলোকিত মনে হয়। আর সেই কারণেই আমার জীবন এতো আনন্দময়।
ইস্টইয়র্ক, কানাডা