
আবদুল্লাহ আল মামুন
কক্সবাজারে রেললাইনের পাশ থেকে আবদুল্লাহ আল-মামুনের (৩০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উন্মোচন হয়েছে। মোবাইল ফোনে থাকা তরুণীর আপত্তিকর ভিডিও-ছবির জেরে তার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার শাহেদ হোসেন তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেন।
বুধবার (১০ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। এর আগে গত রবিবার রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের খাদেমের পাড়ায় হাত-পা বাধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়
র্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মামুন হত্যার বিস্তারিত তুলে ধরেন ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান। তিনি বলেন, প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোন থেকে ফেরত না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শাহেদ এক লাখ টাকায় ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ দিয়ে মামুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তাদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ঈদগাঁও উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শাহেদের। সম্পর্ক চলাকালে তারা দুজনেই ঘনিষ্ট মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। একসময় মেয়েটির সঙ্গে শাহেদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মেয়েটি শাহেদের মোবাইল ফোন থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তার সামনে মুছে ফেলতে তাগাদা দেয়। এতে রাজি হলেও সেগুলো গোপনে সংরক্ষণের জন্য আগে বন্ধু মামুনের মোবাইল ফোনে পাঠান। এরপর নিজের ফোন থেকে প্রেমিকার সামনে সেগুলো মুছে ফেলেন শাহেদ।
পরে প্রেমিকার ছবি ও ভিডিও ফেরত চাইলে এবং তার ফোন থেকে সেগুলো মুছে ফেলতে বললে তাতে অনীহা প্রকাশ করেন মামুন। বারবার বলার পরও রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন শাহেদ। সাজান মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা। সে অনুযায়ী, গত ৬ জুলাই রাতে মামুনকে ফোন করে ডেকে নেন শাহেদ। কক্সবাজার শহরের বাজারছড়া বাজারে আসলে তার মোটরসাইকেলের পেছনে বসে রওনা দেন ঈদগাঁও উপজেলার কালিরছড়া বাজারের দিকে। সেখানে পৌঁছলে সন্ত্রাসী শাহীন ওরফে লালু ডাকাতের লোকজন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর পরিকল্পনামতো ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মামুনের কাছ থেকে ফোনটি নিয়ে শাহেদের হাতে তুলে দেন। এরপর শাহেদ মোটরসাইকেল নিয়ে কক্সবাজার ফেরেন। সন্ত্রাসীরা মামুনকে হত্যা করে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মরদেহ রেললাইনের পাশে ফেলে রাখে। গভীর রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা শাহেদের ফোনে কল দিয়ে বলে, ‘খেলা শেষ’।
র্যাব জানায়, নিহত মামুন খুরুলিয়া ঘাটপাড়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে। আর মো. শাহেদ হোসেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার মাছুয়াখালী সিকদারপাড়ার মতিউর রহমানের ছেলে। তবে শাহেদ থাকেন কক্সবাজার শহরে।
র্যাব আরও জানায়, নিহত মামুন পেশায় ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর ব্যবসায়ী। কক্সবাজার শহরতলির লিংকরোড বাজারে ভিশন ইলেকট্রনিকস নামের একটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে তিনিসহ তিনজনের। এই বিক্রয়কেন্দ্র নিহত মামুন, তার বন্ধু শাহেদ হোসেন (গ্রেপ্তার) এবং শাহেদের ভগ্নিপতি জসিম উদ্দিনের যৌথ শেয়ার রয়েছে। ব্যবসা চলত তিনজনের উপস্থিতিতে।