
গনতন্ত্রই আসল কথা। যেখানে গনতন্ত্র নাই, সেখানে কিছুই নাই বলা যায়। কারণ গনতন্ত্র না থাকলে জবাবদিহিতা থাকে না। জবাবদিহিতা না থাকলে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। কেন বলছি, যাদের এ মুহুর্তে ইন্টারনেট সংযোগ ছিনতাই হয় নি তারা টিভি খুলে সিএনএন দেখতে পারেন। আমেরিকার ক্যাপিটল হিলে শুনানি চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর প্রকাশ্য জনসভায় গুলিবর্ষনের ঘটনায় দেশটির সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির ব্যর্থতা নিয়ে। কারা করছে এই শুনানী? কংগ্রেশনাল কমিটি। নাম হলো ‘কমিটি অন ওভারসাইট এন্ড একাউন্টেবিলিটি’। এই কমিটিতে কারা আছেন? সরকারী ও বিরোধী দল উভয় দলের সংসদ সদস্য।
এই কমিটির আজকের শুনানীতে যাকে জেরা করা হচ্ছে তিনি হলেন কিমবারলি সিয়াটল, সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির প্রধান। সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সি হলো আমেরিকার একটি শক্তিশালী আইন প্রয়োগকারী সংস্হা যারা সাধারণত দেশের রাষ্ট্রপতি ও উচ্চপদস্হ রাজনীতিক ও কর্মকর্তাদের প্রটেকশন দিয়ে থাকে।
আজকের এই শুনানীর দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই কমিটিতে সরকারী ও বিরোধী উভয় দলের কংগ্রেসম্যান রয়েছেন। ডেকে আনা হয়েছে সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির প্রধানকে। শুধু ডেকে আনা বললে ভুল হবে, রীতিমত তাকে গ্রীল অর্থাৎ আগুনে ভাজা ভাজা করা হচ্ছে। তার ব্যর্থতার জন্যে তার পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। আর তিনিও অর্থাৎ কিমবারলিও স্বীকার করে নিয়েছেন যে বিগত এক যুগের মধ্যে এটা তার সংস্হার চরম ব্যর্থতা যে তারা আগে থেকে জেনে ট্রাম্পকে প্রটেক্ট করতে পারেন নি। তবে তিনি এও বলেছেন যে তার বাহিনীর মিশন রাজনৈতিক নয়। কারণ এই ঘটনা মানুষের জীবন মরণের। অর্থাৎ মানুষের জীবন বাঁচানো তাদের কাজ।
গনতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি মানুষের জীবনের মুল্য সবচেয়ে বেশী। একজন সাধারণ মানুষ নিহত হলে তার জন্যেও সংশ্লিষ্ট লোকজনকে জবাবদিহি করতে হয়। ব্যর্থতার জন্যে চাকুরী হারাতে হয় অথবা জেলে যেতে হয়। এসবই হয় যদি দেশে গনতন্ত্র থাকে। গনতন্ত্র মানে মানুষের ভোটে পার্লামেন্ট গঠিত হয়। ঠুটো জগন্নাথ পার্লামেন্ট নয় যেখানে সদস্যারা ডাকলেও কোন সরকারী বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্ব দিলেও দিতে পারে আবার নাও পারে! আবার এলেও কোন পার্লামেন্টারি কমিটির ক্ষমতাই নাই দোষী কোন বাহিনীর সদস্যদের শাস্তির সুপারিশ করার।
কাজেই সবার আগে গনতন্ত্র, সবার উপরে গনতন্ত্র। গনতন্ত্র থাকলে মানুষের কাছে ভোটের জন্যে যেতে হয়, হাতে পা’য়ে ধরতে হয়, নাগরিকদের মধ্যে কোন বৈষম্য করার সুযোগ থাকে না বা করতে চাইলেও দশবার ভাবতে হয়।
স্কারবোরো, কানাডা