
রংপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো ফেল। ওরা এসে অফিসে হামলা করল, আগুন ধরিয়ে দিল, আর আপনারা পকেটে হাত দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখলেন। অথচ ঢাকায় আমার ছাত্রলীগের অন্তত আট থেকে ১০ জন শাহাদাত বরণ করেছে।
আওয়ামী লীগের শাহাদাত বরণ করেছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নাশকতাকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা পকেটে হাত ঢুকিয়ে ঘুমিয়ে থাকলে ওরা ঘরে ঘরে ঢুকে আমাদের মেরে ফেলবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার রংপুরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন।
দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুষ্কৃতকারীরা ছাত্র-আন্দোলন থেকে গণভবন আক্রমণ করেছিল। বঙ্গভবনের চতুর্দিকে ঘেরাও করেছিল। সচিবালয়ে আক্রমণ করেছিল।
সেখানে কত ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেগুলো জানা উচিত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ভাঙচুরের আন্দোলন শুরু করে দিল। রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করার আন্দোলন শুরু করে দিল। সেতু ভবন পুড়িয়ে দিল। সেতু ভবনের সঙ্গে কোটা আন্দোলনের কী সম্পর্ক, এটা আমার জিজ্ঞাসা।
ত্রাণ অধিদপ্তরও পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সংস্কৃতির ধারক-বাহক বিটিভি। স্বাধীনতা আন্দোলনসহ আমাদের গৌরবোজ্জ্বল সব কিছু বিটিভির তথ্যভাণ্ডারে, আর্কাইভে ছিল। পরিকল্পিতভাবে বিটিভি ভবনে আগুন দিয়ে আর্কাইভগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই আন্দোলনের পেছনে নিশ্চয়ই একটা কারণ ও শক্তি আছে। তারা আমাদের গর্বের মেট্রো রেলেও আগুন দিয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল ঘরগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হলো। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণ করা হলো। নরসিংদীতে হাজার হাজার মানুষ এসে কারাগার ভেঙে ফেলল। সেখান থেকে ৯ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হলো। তাজহাট থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ডিবির কার্যালয়ে আক্রমণ করা হলো। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা, উত্তরা থানা, মোহাম্মদপুর থানায় আক্রমণ করেছে। এভাবে একের পর এক থানায় হামলা করা হয়েছে।’
সভার শুরুতে সহিংসতায় রংপুরে ক্ষয়ক্ষতি ও সার্বিক পরিস্থিতি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নগরীর তাজহাট থানা, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িসহ বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করেন।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি, জাকির হোসেন সরকার এমপি, আসাদুজ্জামান বাবলু এমপি, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।