
কটা টিভির খবরে দেখলাম শুধুমাত্র “আয়না ঘর” নামক একটা টর্চার সেল থেকে এ পর্যন্ত দুইশত মানুষ মুক্তি পেয়েছে। কেউ কেউ সেখানে দশ বার বছর যাবত আটক ছিল। অনেকের স্বজনরা তাদের হারিয়ে যাওয়া মানুষটির ছবি নিয়ে সেখানে দিনরাত দাঁড়িয়ে আছেন, আশায় বুক বাঁধছেন, এই বুঝি তার প্রিয়জন বের হয়ে এসে আচমকা জড়িয়ে ধরবে! অথচ তারা জানে না, সবাইকে হয়তো জীবিত রাখা হয় নি। এটা কোন কথা হলো? এরপরও আপনারা অন্য ইস্যু এনে এসব ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করবেন?
শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আইন শৃংক্ষলা বাহিনী দিয়ে মানুষ গুম করার কাহিনী শুনেছিলাম সেই ছোট বেলায় আর এই সময়ে। একটা বিশেষ রেজিম ও তাদের উত্তরসুরীদের শাসনকালে!
কাজেই এখন আমরা চাই দেশে আর কোন আয়না ঘর যাতে তৈরী না হয় সেজন্যে সবার আগে রাষ্ট্র সংস্কার। অন্যথায় আয়না ঘর থেকে যাবে, শুধু গুম করার নির্দেশদাতা পরিবর্তন হবে। গুম চলতেই থাকবে।
এই যে আজ দেশের অনেক থানা থেকে পুলিশ বাহিনীর অনেকেই লা পাত্তা হয়ে গেছে, পালিয়ে গেছে, এর কারণ কী? মজার ব্যাপার হলো, পুলিশ এসোসিয়েশনের সভাপতি স্বীকার করলেন, পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সব পুলিশ খারাপ নন কিন্তু কারা কোন ভুমিকায় ছিলেন তা আমরা দেখেছি। এখন সময় গোটা পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করা। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন পুলিশ জনগণের বুকে গুলি চালাতে সাহস না পায়। তবে তার আগে দরকার নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে উদঘাটন করা, ১৯৯০ সালের পর থেকে কোন কোন রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় পরিচয়ের সুবাদে কত জন পুলিশকে নিয়োগ দিয়েছিলো। রাজনৈতিক পরিচয়ে যারা নিয়োগ পেয়েছিলো তারা আজ চুপ থাকলেও ভবিষ্যতে আবার ফণা তোলার সাহস পাবে।
ইতিমধ্যেই শুনলাম, সচিবালয়ে, পুলিশের থানায়, ব্যাংক বীমাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে চলছে পুরাতন দলের সমর্থকদেরকে হটিয়ে অন্য দলের সমর্থকদের দখল বাজি, কর্তৃত্ব । এসব বিষয়েও নুতন সরকারকে নজরদারী করতে হবে এবং কঠোরভাবে দলবাজী বন্ধ করতে হবে। মনে রাখা দরকার পাঁচ শতাধিক শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই পরিবর্তন কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে হয় নি, হয়েছে সাধারণ ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে।
স্কারবোরো, কানাডা