10.7 C
Toronto
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

উপদেশ বিলি

উপদেশ বিলি
উপদেশ বিলি

Soul searching দরকার বলে যারা এখনো উপদেশ বিলি করছেন, সাম্প্রতিক ঘটনায় তাদের সামান্যতম আত্ম উপলদ্ধি হয়েছে বলে মনে হয় না। ২০০৯ থেকে ২০২৪ যথেষ্ট Soul Searching করেছেন। আপনাদের পরামর্শে দেশের কোটি কোটি মানুষকে বিভক্তের রাজনীতি দিয়ে নীলকন্ঠ করেছেন, কোন লাভ হয় নি তার প্রমাণ এবারের স্টুডেন্ট আপ রাইজিং। বিমান বন্দর থেকে শুরু করে দেশের আনাচে কানাচে এই Soul Searching এর প্রভাব দেশের শিশু, তরুণ, যুবকদের মনন ও মগজে গেঁথে দেবার চেষ্টা করেছেন। পাঠ্য পুস্তক, সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল, সিনেমা, নাটক, ধর্মশালা, পানশালা এমন কোন জায়গা নেই যেখানে এই Soul Searching এর নামে দেশের অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য মুছে দিয়ে এক তরফা মনোজগত গড়ে দিয়ে বংশ পরস্পরায় একটা বংশংবদ জাতি গড়ে দিয়ে যাবার চেষ্টা করেন নাই। কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত বিগত ১৬ বছরের প্রচেষ্টা এক নিমিষে ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। এই আপ রাইজিংয়ে শুধু সম্পদ ধ্বংসের হিসাব কষছেন আপনারা, কিন্তু তলিয়ে দেখুন সম্পদ ও প্রাণহানি ছাড়াও আরো অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে আপনাদের।

আজকের একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে যারা আহত বা নিহত হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে তাদের অধিকাংশই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না।

- Advertisement -

২০১৩ সালের গণজাগরন মন্চ থেকে যে সাংস্কৃতিক আকাংখা আপনারা এবং দেশবাসী দেখেছিল ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেখলো তার সম্পুর্ণ বিপরীত চিত্র।

আপাতত শুধু এটুকু বলি, মানুষে মানুষে বিভক্তি তৈরী করে, বৈষম্য তৈরী করে আর একই সাথে আদর্শের বুলি কপচিয়ে গলা অবধি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থেকে আর যাই হোক Soul Searching এর বটিকা গেলাতে পারবেন না।

পবিত্র ধর্মের বাণী যারা প্রচার করবেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা যারা প্রচার করবেন, তাদেরকে অবশ্যই সততার পরকাষ্ঠায় উতরিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় আপনার সাথে সাথে আপনার আদর্শটাকেও মানুষ খারাপ ভাবতে শুরু করলে কাউকে দোষ দেয়া যাবে না। আশা করি সকল মহলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।

বিভাজন ও বিভক্তির রাজনীতি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত রাজনীতি। বিভক্তি থাকলেই সমাজের নিকৃষ্টরা উঠে আসার সুযোগ পায়, নেতৃত্ব দেবার সুযোগ পায়। একই দেশের আলো বাতাসে বড় হওয়া, একই সোদা মাটির গন্ধ নিয়ে বেড়ে উঠা পাশাপাশি বাড়ীর দুই তরুনের বন্ধুত্বকে আজ শত্রুতে পরিণত করে দিয়েছে আজ এই বিভাজনের বিষবাস্প। স্কুল কলেজ পড়ুয়া দুই গ্রামের দুই তরুণী যাদের আজ খোলা আকাশের নীচে হাতে হাত ধরে, কাধে কাধ রেখে রেখে ছুটে বেড়ানোর কথা তারা আজ রাজনৈতিক বিভাজনের হিংস্র ছোবলে ক্ষত বিক্ষত।

দুঃখের সাথে বলতে হয়, সমাজ, দেশ, রাষ্ট্রকে বিভক্ত করে শুধুমাত্র পছন্দের রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় রাখতে এই কাজে যারা সবচেয়ে বেশী বুদ্ধিবৃত্তিক ইন্ধন যুগিয়েছেন তাদের মধ্যে দুজন ব্যক্তি হলেন ড. জাফর ইকবাল এবং ড. হারুন অর রশিদ।

আশা করি এত রক্তপাত আর ত্যাগের বিনিময়ে সমাজ থেকে এই বিষাক্ত বিভক্তির রাজনীতির মূল উৎপাটন সম্ভব হবে এবং দেশের সকল নাগরিক একই রকম অধিকার ও বৈষম্যহীন সুযোগ সুবিধা মাথা উচুঁ করে ভোগ করতে পারবে।

কেউ যখন ভুল করে, আবার সেই ভুল থেকে বের হয়ে আসতে পারে না, তার জন্যে তিনি নিজে যতটা দায়ী, তার চেয়েও বেশী দায়ী কিছু সমর্থক ও মোসাহেব গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীটি জানে যে তিনি ভুল করছেন তবুও তাকে কখনো ভাল পরামর্শ দিবে না, সারক্ষণ তার ভুলকেই জয়ধ্বনি দিয়ে যাবে। কারণ তারা ভাবে এসব করে বোধহয় তাদের নেতা নেত্রীর গুড বুকে উঠা যাবে। আর গুড বুক মানেই হলো সীমাহীন অনৈতিক সুযোগ সুবিধা। কিন্তু সমস্যা হলো এই কাজে সীমাহীন ক্ষতি হয়ে যায় সেইসব নেতানেত্রীর। যে ক্ষতি থেকে তাঁরা আর বের হয়ে আসতে পারে না। ফলে বলা যায়, যে বা যারা কোন কিছু চাওয়া পাওয়ার জন্যে দল করেন না, দলকে সত্যিই মন থেকে ভালবাসেন, তাদের উচিত নিজ দলকে সমালোচনা করা, ভুল ত্রুটি নিঃশংক চিত্তে ধরিয়ে দেয়া, মোসাহেবী করে গণবিরোধী অবস্হান না নেয়া। সংকটে সেটাই একজন প্রকৃত ত্যাগী কর্মীর কাজ।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles