
গেল মাস শেষ হলো ‘রক্তাক্ত জুলাই’ নাম ধারণ করে। বাস্তবতা হলো, রক্তের ছোঁয়া লাগা প্রতিটি অতীত বারবার ফিরে আসে স্মৃতিতে, শপথে। যেমন আগস্টের ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াই বুকের গভীরে।
জুলাই শুধু দেশকে বিভক্ত করেনি। আমার মধ্যে বাস করা আমিকেও কেড়ে নিয়েছে। দুই ভুবনের বাসিন্দা এখন কাছে থেকেও অনেক দূরে? কষ্ট হয় প্রচুর। আমি অপেক্ষায় বিশ্বাসী কিন্তু বিভাজনে নয়।
আশা করি, সত্বর শান্ত হবে দেশ।
আশা করি, শত্রু শত্রু খেলা এখনই বন্ধ হয়ে যাবে।
আশা করি, পানি পান করানো কোন যুবকের পানির বোতলে আর পড়বে না কোন রক্ত।
আশা করি, পথচারীর অনুরোধে অজ্ঞাতনামার লাশ নামাতে গিয়ে কোন পিতা দেখবে না লাশটি তার নিজ পুত্র।
আশা করি, রাষ্ট্রীয় কোন কর্মচারীর মৃত দেহকে কেউ ঝুলিয়ে রেখে উল্লাস করবে না।
আশা করি, আর কোনদিন পায়ের রগ কেটে কোন ছাত্রকে কেউ ছাদ থেকে ফেলে দেবে না।
আশা করি, মানুষ দেহে নয়, বাস করে হৃদয়ে। এই সত্য দেখতে পাবে সকলে।
আশা করি, একদিন সন্তান হারানো মায়েরা বলতে পারবেন বিচারের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।
আশা করি, হাঁটতে হাঁটতে একদিন যুবক জানতে পারবে মাদার অব অল স্লোগান হলো, জয় বাংলা।
আশা করি আমার দেশে আর কক্ষনো কেউ ‘তুই’ কে ‘আমি’ বলবে না।
আশা করি ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ হবে আমাদের সবার অহংকার।
আশা করি যে শিশু জন্ম নেবে বাংলাদেশে সে যদি অন্ধও হয়, তবুও দুটি সংখ্যাকে সে অন্য সবকিছু থেকে পৃথক করতে পারবে, ৭১
এবার আমার পরিচয় দিয়ে শেষ করছি।
পত্রিকার ছাপা অক্ষরে প্রথম ছড়া লিখেছিলাম ১৯৭২ সালে। বিষয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রথম কাভার স্টোরি ছাপা হয়েছিল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘পাক্ষিক প্রতিরোধ’ এর ১লা এপ্রিল ১৯৮৬ সংখ্যায়। বিষয়; জাতীয় স্মৃতি সৌধ।
প্রথম গল্প ছাপা হয়েছিল সাপ্তাহিক বিচিত্রা’র ১৯৯৩ সালের ঈদুল আযহার বিশেষ সংখ্যায়। বিষয়; মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা ‘স্মৃতির রঙ সবুজ’।
প্রথম উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত, ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ (২০২১)।
এই আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়। জানি না পাওয়া গেল কিনা কোন সম্পর্ক, পরিচয় অথবা মিল অমিলের উৎস। কলমের বয়স বায়ান্ন বছর। কখন কী লিখেছি কেউ হয়তো পড়ে দেখেনি, পড়ে থাকলেও কেউ হয়তো মনে রাখেনি। লেখালেখি ভাত নয় যে একটা টিপেই বলে দেওয়া যায়, নীরব মানে ‘অবক্ষয়’। মন ছুঁলে নীরবে কেউ কেউ বলে বিস্ময়। আবার কারোর কাছে নীরবতার মানে, হাত ছেড়ে দেওয়া। যাইহোক, ফিরে আসি প্রথম ছড়ার শেষের চার লাইনে
‘রবি দাদু এসো তুমি
বাবরি চুল দুলিয়ে
আমার মত এসো তুমি
বুকটা এবার ফুলিয়ে।
আপনারা ভালো থাকবেন। এবার একটি ঘুম দরকার। আবার হয়তো পাখির ডাকে একদিন জেগে উঠবো। আপাতত হে বন্ধু – বিদায়।
স্কারবোরো, কানাডা