-5 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

বাংলাদেশ ও কানাডার সিভিল সার্ভিস: মেধা বনাম স্পয়েল সিস্টেম

বাংলাদেশ ও কানাডার সিভিল সার্ভিস: মেধা বনাম স্পয়েল সিস্টেম
বাংলাদেশ ও কানাডার সিভিল সার্ভিস মেধা বনাম স্পয়েল সিস্টেম

বৃহস্পতিবার সকালে অফিস শুরু করতেই বন্ধু মারুফের ফোন এল। তার খবরের জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম অনেকদিন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা মারুফ জানালো, সে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছে। খবরটি শুনে খুবই আনন্দিত হয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত ছিল সে।

আজ আরও একটি খবর পেলাম, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আরেক বন্ধু সোহেলকে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি পদ থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। এই খবরটি শুনে মর্মাহত হয়েছি।

- Advertisement -

কানাডায় থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের অনেক খবরই ব্যথিত করে। বাংলাদেশের ব্যুরোক্রেসি অনেকটাই স্পয়েল সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করা হয়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসন (১৮২৯-১৮৩৭) এই স্পয়েল সিস্টেমের জনক বলে পরিচিত। আমি একসময় ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় এ বিষয়ে অনেক লিখেছি, কিন্তু এসবে পরিবর্তন হয়না। কাজ হয় না।

কানাডায় কাজ হয়, কারণ এখানে ফেডারেল সিভিল সার্ভিসে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি ও অবসর হয়। বাংলাদেশের মতো সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তাদের এত সামাজিক মর্যাদা নেই এখানে। কানাডার সিভিল সার্ভিসের সর্বোচ্চ পদ হলো ক্লার্ক অব প্রিভি কাউন্সিল, আর এর পরের পদটি হলো ডেপুটি মিনিস্টার। সিভিল সার্ভিসে কর্মজীবন শুরু হয় ক্লার্ক/অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট পদ দিয়ে। এরপর ধাপে ধাপে প্রোগ্রাম অফিসার, ম্যানেজার, অ্যানালিস্ট, ডিরেক্টর, ডিরেক্টর জেনারেল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেপুটি মিনিস্টার ইত্যাদি পদে উন্নীত হওয়া যায়।

অনেক বাংলাদেশি-কানাডিয়ান ফেডারেল, প্রভিন্সিয়াল এবং সিটি সার্ভিসে উচ্চ পদে কর্মরত আছেন।

আশা করি, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস মেধাকে প্রাধান্য দেবে, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর হবে, এবং সেবা প্রদানে সৎ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, বন্ধু মারুফসহ যারা সিভিল সার্ভিসে আছেন, তারা জনগণের সেবক হয়ে একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেবেন।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles