-1.7 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

দেশটার ভবিষ্যৎ কী!

দেশটার ভবিষ্যৎ কী!
দেশটার ভবিষ্যৎ কী

আমাদের দেশে বারবার যুদ্ধ হয়, বারবার স্বাধীনতা অর্জন হয়। কিন্তু আমরা এমন এক অভাগা জাতি যে কোনো দিনও স্বাধীনতা ধরে রাখতে পারি না। সভ্য হতে পারি না। নিয়মতান্ত্রিক হতে পারি না। অসুষ্ঠু পরিচালনার কবলে পড়তে হয়।

দেশে যেসব স্বৈরশাসক এসেছেন-গেছেন তাদের কথা যদি বাদই দেন, যারা সবকিছুর বাইরে থেকে দেশটা পরিচালনার দায়িত্ব নিলেন তাদের ওপর জনগণের ভরসা কতোটুকু থাকছে এ নিয়ে অনেকের মনে এখন জলঘোলা।

- Advertisement -

১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে ঐরকমই বা তার চেয়ে বীভৎস বলা যেতে পারে ২০২৪ সালের যুদ্ধ। এতগুলো ছাত্র-জনতাকে জাস্ট পাখির মতো সবার সামনে বা অগোচরে গু*লি করে মে*রে ফেলা হলো। এতগুলো মানুষ প্রাণ দিল কেন? দেশের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনতে তো? কেউ যেন গু*ম না হয়, আয়নাঘরে না থাকে, কিংবা মানুষের বাক স্বাধীনতা থাকে। সে যেই হোক না কেন, যে দলেরই মানুষ হোক না কেন যে কোনো বিষয়ে মত দেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে, সমালোচনা করতে পারবে। সমালোচনাকারীকে ধরে গারদে বা আয়নাঘরে পুরে রাখবে না দেশে সরকার। এটাই হওয়ার কথা। কিন্তু বিগত স্বৈরাচার হাসিনা আপির সরকার এসবের একটা নজিরবিহীন উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন । সেই উদাহরণ এখনো কেউ কেউ ইউজ করে যাচ্ছেন হয়তো যাবেন। এত তাড়াতাড়ি ভালো হবে না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে সব বিষয়গুলোতে সাধারণত সমালোচনা হচ্ছে সেগুলো হলো:
#১ দেশের পুলিশ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। যে কোনো জায়গা বা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের ভূমিকা থাকতে হবে প্রচুর। আর সবার আগে আম্লিক পুলিশ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সব জায়গাতেই চরম সমস্যা দেখা যাবে।

#২ মিস্টার চপ্পুকে বসিয়ে রেখে কতোটুকু দেশে নিরপেক্ষতার কাজ চালানো যাবে সবার মনে সেটা সন্দেহ।

#৩ উপদেষ্টা প্যানেলে শক্তিশালী ও কার্যকরী সদস্যদের নিয়োগ দিতে হবে। যারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন। যে আম্লিক সরকারকে হটানোর জন্য এতগুলো প্রাণ সেই দলের সমার্থকদের নিয়ে প্যানেল বানানো যথেষ্ট অযৌক্তিক।

#৪ আসিফ নজরুল স্যারের পেছনে আম্লিককে আইডলের ছবি বহাল থাকাটা অনেকেই অসামঞ্জস্য মনে করছেন। এত বড়ো বড়ো মূর্তি ভাঙ্গা হলো তাহলে স্যারের পেছনে ছবিটা নামছে না কেন? তাছাড়া ওনার কিছু বক্তব্যে অনেকেই মনে করছেন সেটা এক রকম আম্লিকের পক্ষের কথা হচ্ছে।

#৫ এত বড়ো একটা যুদ্ধ হলো, হাজারো ছাত্র-জনতা মা*রা গেলেন। আর হাজারো ছাত্র-জনতা হাসপাতালে আছেন অত্যন্ত খারাপ অবস্থায়। তাদের চিকিৎসা খরচ চলছে না। এই সরকারের অন্যান্য কাজের পাশে প্রথম কাজটা হওয়া উচিত ছিল সব আহত ভিকটিমদের একটা লিস্ট তৈরি করে জনগণের সামনে তুলে ধরা। তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করা। তারপর তাদের মাসে মাসে একটা ভাতার সিস্টেম চালু করা। সঙ্গে বিগত সকল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করে তা বাতিল করা হোক। তাদের ভাতা এসব আহ*তদের দেওয়া হোক।
কিন্তু সেসব কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

#৬ প্রতিটা স্কুলে ছোট-ছোট ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের ধরে পদত্যাগে বাধ্য করাচ্ছে এটা মোটেও প্রশংসনীয় নয় তো বটেই অপরাধও বলা যায়। কোনো স্কুলের শিক্ষকের যদি অপরাধ থাকে সেটা সরকারিভাবে মোকাবেলা হবে। ছাত্ররা আন্দোলন করে একটা বড়ো ভূমিকা পালন করেছে তাই বলে এখন যেকোনো বিষয় তারা সিদ্ধান্ত নেবে, জোর করে একটা কিছু ঘটাবে এমনটা কোনো সুষ্টু দেশের কাজ না। সরকার থেকে এসব ছাত্রদের বোঝানো ও তাদের কাজটা কি সেটা জানাতে হবে।

#৭ এই যে ছাত্ররা ধরল তারা পরীক্ষা দেবে না, অটো পাশ দিতে হবে। সরকার সেটাই মেনে নিলেন। কেন? কিছু না পড়া ছাত্ররা বেনিফিটেড হতে পারে কিন্তু মেধাবীরা কখনোই বেনিফিটেড হয় নি। বরং চরম ক্ষতি হয়েছে। এমনকি তারা যখন বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করবে এই অটোপাশ তাদের খুব বেশি সহায়ক হবে না বলে দিলাম।

#৮ দেশের গজিয়ে ওঠা আনসারকে মোকাবেলায় পুলিশ ও আর্মিদের ভূমিকা থাকতে হবে। ছাত্ররা কেন আনসারের হাতে গু*লি খাবে। আনসার ঘেরাও বা আন্দোলন শুরু করলে নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় থাকে?

#৯ বিচার বিভাগে এখনো নিরপেক্ষ না। আগের দলের মনোনীত স্যারেরা আছেন।

#১০ শোনা যাচ্ছে আরাফাতকে নাকি পার করে দেওয়া হচ্ছিল! কীভাবে? তার গ্রে*ফতারের খবর শোনা গেলেও কোথায় দেখা যায় নি।

#১১ সেনাবাহিনীর হেফাজতে অনেকেই আছেন যাদের মারাত্মক দুর্নীতির ইতিহাস আছে। সরকারের কাছে কেন হস্তান্তর করা হচ্ছে না?

#১২ সরচারকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আদালতে নিতে হবে কঠোর নিরাপত্তায়। আদালতে নিতে গিয়েই যদি তারা মা*রা যায় তবে তাদের বিচার হবে কীভাবে?

দেশে যদি এসব সুষ্ঠুভাবে ম্যানেজ না হয় তাহলে স্বাধীনতা ভোগ করা যাবে না। সেইজন্য এই সরকারকে আরো সুগঠিত হতে হবে।

তবে এত কথার পরেও এই সরকারের মেয়াদ এক মাসের মতো হবে। এত অল্প সময়ে ষোল বছরের পাপ মোচন করা যাবে না রাতারাতি। সময় লাগবে। তবে সরকার যদি কৌশলী না হন আর ফেঁসে যান তাহলে কিন্তু মহা বিপদ হবে।

আল্লাহ আপনাদের নিরাপদ ও সুস্থ রাখুন।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles