
মনে করুন, ভারতের কোনো এক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী (ধরুন তার নাম- মতি) গণঅভ্যুত্থানে জান বাঁচাতে তার দেশের কোটি কোটি শুভাকাঙ্ক্ষী শিবসেনাদের ফেলে (নিজে বাঁচলে মুরিদের নাম) হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে বাংলাদেশের তার দোস্ত সরকারের (বউ সম্পর্কের) গ্রীন সিগনাল পেয়ে হুট করে ঢাকায় এসে থাকতে লাগলো। তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হলো। ওদিকে ঢাকা পড়েছে বিপদে; মতি কে গিলতেও পারছে না, আবার উগড়ে দিতেও পারছে না। লোকজন কানাঘুষা করা শুরু করেছে যে, একজন খুনিকে কেন তাদের দেশে থাকতে দিচ্ছে? তারা বলাবলি করতে লাগলো- তোদের দেশে কেউ এভাবে পালায়ে আসলে তোদের কেমন লাগতো? প্রধানমন্ত্রীকে আর ভোট দিবো না!
আরে ঐ যে, ছোটকালে দেখতাম, বাড়িতে কিছু দুঃসম্পর্কের আত্মীয় পরিচয়ে আসতো না? যারা এসে বেশ কিছুদিন থাকা হয়ে গেলেও আর যাওয়ার নাম নিতো না। সুযোগ পেলে কবিতা শোনাতো আর মেজাজ খারাপ হলে পড়া ধরতো! আব্বা বাধ্য শেষে উনাদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলতো- কিছু মনে করবেন না; ভাড়া আমি দিচ্ছি.. যদি কষ্ট করে একটু হোটেলে থাকতেন..। কেউ আবার খুশি হয়ে হোটেলে থাকতো, তবে তিনবেলা এসে ঠিকই কবিতা শুনিয়ে আমার সাথে ডাইনিং টেবিলে বসে যেতো।
মতিও সেরকম। হাজারখানেক মানুষ মেরে, জান বাঁচাতে ঢাকায় বসে জামাই আদরে ফখরুদ্দীন বাবুর্চির কাচ্চি খাচ্ছিল-দাচ্ছিল, ঘুমাচ্ছিল, কলকলাচ্ছিল..। আর যাওয়ার নাম নাই তো নাই..। মতিকে ঢাকার প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিলো, দেখো আমি প্লেনের টিকিটের ভাড়া দিয়ে দিচ্ছি, তুমি আরেক দেশে থাকো লক্ষীটি?
সে আরও নাছোড়বান্দা, বউকে রেখে কিছুতেই যাবে না!
তারপর একদিন!
ঢাকার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে হেরে গেলো; নতুন সরকার প্রধান আসলো। মনে করেন তার নাম জরিনা। জরিনা এসেই মতি কে চ্যাংদোলা করে ঠিকই ফট করে আবার ভারতে ছুড়ে দিলো! মতি কতো কান্দাকাটি করলো, শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে যাবেই না..
কিন্তু সতীনের ঘরে মতির জায়গা হলোই না।
টুনটুনি টুনটুনালো, মতির গল্প ফুরালো।
অটোয়া, কানাডা