
প্রাথমিক ভাবে রোগ নির্ণয় করতে গেলে চিকিৎসকেরা জিভ দেখাতে বলেন। তার পর চোখের তলার অংশ টেনে পরীক্ষা করে দেখেন শরীরে হিমোগ্লোবিন বা আয়রনের মাত্রা। তবে ঠোঁটের দিকে অনেক কম নজর থাকে সবারই।
অনেকের ধারণা, ঠোঁটে কালচে ছোপ পড়ার একমাত্র কারণ বোধ হয় ধূমপান। ঠোঁটের রং বদলে যাওয়ার নেপথ্যে শারীরিক নানা ধরনের সমস্যার ইঙ্গিত থাকতে পারে তা অনেকেই জানেন না।
তবে ঠোঁটের রং দেখেও স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব। ঠোঁটের রং থেকে আমাদের শরীরের ভিতরে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা নানা সমস্যার লক্ষণগুলো আগাম বোঝা সম্ভব।
নীলচে ঠোঁট
শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে ঠোঁট নীলাভ বর্ণ ধারণ করতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘সায়ানোসিস’ বলা হয়। এ ছাড়া হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক কিংবা শ্বাসকষ্ট শুরু হলেও ঠোঁট নীলচে-বেগনি রং ধারণ করতে পারে।
ফ্যাকাসে ঠোঁট
সাদা কিংবা ফ্যাকাসে ঠোঁট সাধারণত অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণ। শরীরে হিমোগ্লোবিন, আয়রনের ঘাটতি থাকলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কালচে ঠোঁট
অতিরিক্ত ধূমপান করলে ঠোঁটে কালচে ছোপ পড়ে। এ ছাড়া দাঁত, মাড়ির সমস্যা হলেও কালচে হয়ে উঠতে পারে ঠোঁট। অতর্কিতে চোট-আঘাত লাগলে বা ঠোঁটে রক্ত জমলেও কালচে ছোপ পড়ে।
ঠোঁটে গাঢ় লাল বা কালো ছোপ
এমনটা হলে বুঝতে হবে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যথেষ্ট ঘাটতি হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত শারীরিক-মানসিক চাপের ফলেও এমনটা হতে পারে। এই সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। সঙ্গে মাছ, ভাত, আলু, গাজর, আমন্ড ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার-দাবার নিয়মিত খেতে হবে।
গাঢ় লাল ঠোঁট
লিভার, প্লীহা বা স্প্লিনের সমস্যা হলে, শরীর মাত্রাতিরিক্ত গরম হয়ে উঠলে ঠোঁটের রঙ গাঢ় লাল হয়ে যেতে পারে। ঘন ঘন বুক জ্বালা, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যার ক্ষেত্রেও এই লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ঠোঁটের স্বাভাবিক রং ফিরে পেতে কী করবেন
ঠোঁটের স্বাভাবিক রং ফিরে পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত। শরীরে পানির অভাব ঘটতে দিলে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দেয় যার দরুন ঠোঁটের রং ও বদলে যায়।
এছাড়া সপ্তাহে অন্তত দু’বার ঠোঁটে স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েট করা যেতে পারে। রোদ থেকে বাঁচতে ‘এসপিএফ’ যুক্ত লিপ বামও ব্যবহার করতে হবে।