-5 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

পোড়াবাড়ি এবং অগ্নিদগ্ধ কাঁঠাল গাছের প্রতিবেদন

পোড়াবাড়ি এবং অগ্নিদগ্ধ কাঁঠাল গাছের প্রতিবেদন
পোড়াবাড়ি এবং অগ্নিদগ্ধ কাঁঠাল গাছের প্রতিবেদন

পোড়াবাড়ির তিনটি গাছও পুড়ে গেছে! অগ্নিদগ্ধ কাঁঠাল গাছটির সাথে অন্য গাছ দুটিও সবুজ পাতায় জেগে উঠেছে। যেন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রকৃতি। ফিরে আসছে উড়ে যাওয়া পাখিরা।

হ্যাঁ, বলছি- ধানমন্ডির লেকের পাড়ে সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর দুঃখি বাড়িটি কথা। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর নামক এই ঐতিহাসিক বাড়ির ১০ হাজারের বেশি নিদর্শনের সবই এখন অগ্নিদগ্ধ ছাইভস্ম ও স্মৃতি। সেই সাথে চার চারটি অগ্নিদগ্ধ লাশ! পঁচাত্তরে ছিলো ৩৩টি গুলিবিদ্ধ লাশ!

- Advertisement -

বর্তমান হল্ডিং নম্বর মোতাবেক ১০ নম্বর বাড়ি, রোড নম্বর-১১, ধানমন্ডি এই (পুরনো ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর) বাড়িটির সর্বজনীনভাবে পরিচয় পায় বত্রিশ নম্বর বাড়ি হিসেবে। বাংলাদেশের ঠিকানা- এই ৩২ বাড়ি। কারণ, সেই বাড়ি থেকেই বাংলাদেশের উৎস, উৎপত্তি এবং উত্তরণের যাত্রা। বাড়িটির পাতায় পাতায় বাঙালির উত্থান-পতনের ইতিহাস! ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৭১, ১৯৭২, ১৯৭৫ এবং ২০২৪।

পোড়াবাড়ি এবং অগ্নিদগ্ধ কাঁঠাল গাছের প্রতিবেদন

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ করে চলে যাবার পর পরই পরিকল্পিতভাবে এই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলা, ভাঙচুর সেই সাথে পাউটার গান দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। একই সাথে জ্বালিয়ে দেয়া হয় ৩২ নম্বরের দুই পাশের (৬৭৬ এবং ৬৭৮) বাড়ি এবং পেছনের বাড়ি; তথা মোট চারটি বাড়িসহ সান্তুর রেস্টুরেন্টও। পুড়িয়ে দেয়া হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি, ৪৫০০ বই। শুধু রক্ষা পেয়েছে কিছু বই আর আদ্রে মারলো এবং বঙ্গবন্ধুর একটি অক্ষত ছবি, যা উঠানে উল্টো মুখ থুবড়ে পড়া ছিলো।
৩২ নম্বর মূল বাড়ির আড়াইতলা পর্যন্ত প্রতিটি ঘরের দরজা-কপাট পুড়ে গেছে। নিচের ও দোতলার প্রতিটি ঘরের সব জিনিসপত্র পুড়ে মেঝেতে ছাই-কয়লার স্তূপ। সিলিং ফ্যানের পাখাগুলো দুমড়েমুচড়ে আছে আগুনের তাপে। মেঝেতে টুকরো টুকরো ভাঙ্গা কাঁচ। দেয়ালগুলো কালো হয়ে গেছে ধোঁয়া ও কালিতে। আড়াই তলার ঘরে আগুনের ক্ষতি কম। তবে জিনিসপত্র যা ছিল, সেসব লুট হয়ে গেছে। তবে বাইরের দেয়ালে কোথাও কোথাও ‘শোভা’ পাচ্ছে কিছু Gnj-Z মেধাবীদের কিছু অদ্ভূত আঁকাআকি। গণভবনের মতো লুটপাট হয়ে গেছে- উক্ত চারটি বাড়ির অমূল্য সম্পদ।

যখন দাঊদাঊ করে বাংলার ঐতিহাসিক বাড়িটি জ্বলছিলো, পুড়ছিলো, ছাই হচ্ছিলো, ধোঁয়া উড়ছিলো। তখন বাড়িটির মতো যন্ত্রণায় মানসিক ভাবে কাতরাছিলো এবং কাঁজছিলো অনেক বাঙালি। আনিস আলমগীর তখনই তা সরাসরি প্রচার করছিলেন আমাদের এই সাংবাদিক বন্ধু। যা ছিলো একে বারে অসহনীয়!

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের গুলিবিদ্ধ হত্যাকাণ্ডের পর এই বাড়ি শূন্য হয়ে পড়ে এবং এবার ২০২৪-এর ৫ আগস্টে বাড়িটি অগ্নিদগ্ধ লাশে পরিণত হয়!

ইস্টইয়র্ক, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles