9.6 C
Toronto
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

‘ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ আমার ৮৩, কোলে বসলে…’

‘ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ আমার ৮৩, কোলে বসলে…’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নারী সাংবাদিককে শ্লীলতাহানি করার যে অভিযোগ উঠেছে তা তিনি মানতে পারছেন না। বিষয়টিকে ‘পরিকল্পিত কুৎসা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ খণ্ডাতে দিয়েছেন একাধিক ‘আজব’ যুক্তিও দিয়েছেন এ নেতা। এ ছাড়া দল থেকে তাকে বহিষ্কারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তারও সমালোচনা করেছেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, আজ সোমবার বরানগর থানা থেকে বেরিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তন্ময়। নারী সাংবাদিকের করা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই রকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাটিকে আমি পরিকল্পিত কুৎসা বলে মনে করেছি।’

- Advertisement -

কারা আছে এর নেপথ্যে? জবাবে তন্ময় বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল এর পিছনে আছে না কি, দু-একজন ব্যক্তি আছেন নির্দিষ্ট করে এখনই বলা সম্ভব নয়।’

নিজেকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করতে তিনি বলেন, “ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ কেজির বেশি নয়। আমার ওজন ৮৩ কেজি। ৮৩ কেজি ওজনের একজন পুরু‌ষ মানুষ যদি ৪০ কেজি ওজনের এক নারীর কোলে বসে পড়েন, তাহলে সেই নারী শারীরিকভাবে ফিট থাকে কি না, আমি জানি না।’

এ বিষয়ে বলতে গিয়ে ঘড়ি ধরে ঘটনার ব্যাখ্যা করেন তন্ময়। একই সঙ্গে একাধিক প্রশ্নও তোলেন।

তন্ময়ের দাবি, ‘ভদ্রমহিলা আমার বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন আনুমানিক ১০টা ৪০ মিনিটে। আমার পাশের বাড়ির এক যুবক আমায় রাতে জানিয়েছে যে, মেয়েটি হাসতে হাসতেই বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন। মেয়েটি ফেসবুক লাইভে বলেছেন যে, উনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আমার বক্তব্য হলো, যে সময়ে ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে, তার পরে মেয়েটি প্রায় ২৫ মিনিট আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে মেয়েটির সল্টলেক যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে একটি সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা ছিল। ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে আমাদের দুজনের মধ্যেও কথা হয়েছে। আমি তাকে একটা প্রশ্নও সাজেস্ট করে দিয়েছিলাম। যিনি এতটা ট্রমাটাইজড হয়ে রয়েছেন, তার পক্ষে কি এত কাজ করা সম্ভব?’

প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘নারী সাংবাদিকের ক্যামেরাপারসন ঘটনাটা কেন রেকর্ড করল না? ক্যামেরাপারসন প্রতিবাদ করল না কেন? মেয়েটি চিৎকার করল না কেন? বরানগর থানায় অভিযোগ করল না কেন?’

গতকাল রবিবার ওই নারী সাংবাদিক ফেসবুক লাইভ করে অভিযোগ জানানোর পরই তন্ময়কে সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তন্ময় বলেন, ‘পার্টির অভ্যন্তরের ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটি আছে। যে কোনো অভিযোগ এই কমিটির কাছে যায়। তারপর কমিটি তদন্ত করে। এক্ষেত্রে মহম্মদ সেলিম প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনা ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটিতে পাঠানোর কথা বলেন। এই প্রস্তাবে আমি সহমত। তাই আমার প্রত্যাশা ছিল এই কমিটি আমার কাছে জিজ্ঞাসা করাহ যা যা প্রক্রিয়া আছে করবে। তার আগেই প্রচার শুরু হয় আমি সাসপেন্ড। এই সাসপেন্ডেড জানাটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক, আমি মর্মাহত। আমি মনে করি ন্যূনতম তদন্ত করা উচিত ছিল, আমার বক্তব্য জানা উচিত ছিল।’

এদিকে, আগামীকাল মঙ্গলবার ফের তন্ময়কে বরানগর থানায় তলব করা হয়েছে।

তন্ময়কে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘অন্য সময় তো সিপিএমের এই সমস্ত নেতারা অনেক কথা বলেন। এক্ষেত্রে কেন তন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হবে না? যা বলার আদালতে বলবেন।’

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles