-1.7 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

সমাধান একটাই

সমাধান একটাই
সমাধান একটাই

জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদ এবং বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের ১৯৯০ সালের পর থেকে নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে চেষ্টা করেছেন তাদের পার্টিটাকে টিকিয়ে রাখতে। এইসব ঘটনার দুর থেকে নির্মোহ পর্যালোচনা করে পরে একটা লেখা লিখবো। তবে জিএম কাদেরের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল বিগত ২০২৪ সালের নির্বাচনের কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরে এসে বিমান বন্দরে বললেন, ভারতের অনুমতি ছাড়া তিনি কোন কথা বলবেন না। দেশবাসীর সাথে আমরাও তাঁর কথা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। গনতান্ত্রিক কোন দেশ হলে সেদিনই তাকে পার্টি থেকে পদত্যাগ করতে হতো। এটা ছিল চরম আহাম্মকের মত একটা বক্তব্য। তার ঐ সময় ভারত সফরে যাওয়াই ঠিক হয় নি। তারপর এসে যখন ঐ কথা বললেন, তখন তার এবং দলের সমস্ত ক্রেডিবিলিটি শেষ হয়ে গেল।

তাঁর দ্বিতীয় ভুল, শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদিন আগে হলেও সংসদ থেকে সদলবলে পদত্যাগ করে ছাত্রজনতার লং মার্চে শরীক হওয়া উচিত ছিল।

- Advertisement -

আর জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু সহ কয়েকজন ক্ষমতালোভী নেতা যারা বার বার এমপি হবার জন্যে এরশাদ ও জিএম কাদেরের সাথে যেসব ডিগবাজী দিয়েছেন, চাপ সৃষ্টি করেছেন তা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে দালালীর এক নিকৃষ্ট ইতিহাস তৈরী করেছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়সে এরশাদ পত্নী রওশন তার নিজের ও পালক পুত্র সাদ নামক এক রাজনৈতিক বালকের অসাধু খায়েশ পূরণ করতে কখনো শেখ হাসিনার এবং কখনো খালেদা জিয়ার হাতের পুতুল হবার স্বেচ্ছা আত্মাহুতি দেবার নজিরবিহীন খেলা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে কলংকিত করেছে সন্দেহ নেই।

২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ এই তিনটি নির্বাচনে যারা এমপি ছিলেন তদন্ত সাপেক্ষে তাদের অসাধু কার্যকলাপের শাস্তি

দেয়া হোক এটা দেশের আপামর জনগণের দাবী হলে অবাক হবার কিছু থাকবে না।

এতদ্বসত্তেও একটা রাজনৈতিক দলের অফিসে প্রকাশ্যে অগ্নি সংযোগ বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের স্বল্পকালীন কাজের মধ্যে একটা দগদগে কলংকের ছাপ হয়ে থাকবে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে ভুলে গেলে চলবে না, এই অন্তবর্তী সরকারের প্রধান এমন একজন ব্যক্তি যার গ্রামীন ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছিলেন স্বয়ং এরশাদ, যা একটি সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন ড. ইউনুস। এছাড়া একটি দল যত খারাপই হোক, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে তাদের অফিসে এভাবে আগুন দেয়া দেখে মানুষ মনে করতে পারে দেশে আইন বলতে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। কে রাজনীতি করতে পারবে আর কে পারবে না তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব একমাত্র দেশের জণগনের। আমি নিশ্চিত ছিলাম এই বলে যে এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হবে এবং জনগণ প্রত্যাখান করবে। কারণ এবার তাদের পাতানো এমপি হবার সুযোগ থাকবে না।

যে সব দলকে টার্গেট করা হচ্ছে, যাদের নিষিদ্ধ করতে হাইকোর্টে রীট করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, তারা সকলে যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহা মহাজোট গঠন করে, এবং দেশের প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ যদি তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসে, আর দ্রব্যমুল্যের অসহনীয় চাপে অতিষ্ঠ জনগণ যদি ক্ষেপে যায়, তাহলে আগামী নির্বাচনের ফল কী হতে পারে তা কল্পনা করলে অতীত অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বোদ্ধাদের ভীত হবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে সমাধান একটাই। সাবেক পতিত সরকারগুলোর মতই “আমি আর ডামি” নিয়ে নির্বাচন নামক প্রহসনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যদুর পরিবর্তে মধু, আর মধুর পরিবর্তে আবারও সেই যদু।

 

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles