0.6 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

সংস্কার কমিশন কী করবে?

সংস্কার কমিশন কী করবে?
আব্দুল হালিম মিয়া

বর্তমান নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সাথে এক বৈঠকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব আবু হেনা বলেছেন, “নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করে নির্বাচনী আইন প্রয়োগের ওপর। আইন কার্যকর করা না হলে যত সংস্কার বা ভালো আইন করা হোক, তা অর্থবহ হয় না। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনে যোগ্য মানুষ দরকার। তাঁরা যদি যোগ্য না হন, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে।”

আবু হেনা সাহেব নিজে অনেক যোগ্য ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি স্ববিরোধী কথা বলেছেন। প্রথমত তিনি বলছেন, নির্বাচনের সফলতা নির্ভর করে নির্বাচনী আইন প্রয়োগের ওপর। কথাটা শতভাগ সত্য। কিন্তু তারপর তিনি বিশ্বাস করছেন যে একজন যোগ্য মানুষই পারে সুষ্ঠ নির্বাচন করতে। অর্থাৎ একজন যোগ্য মানুষ নির্বাচনী আইন প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে।

- Advertisement -

এটা সম্পুর্ণ ভুল ধারনা। রাষ্ট্রের আইন শৃংখলা বাহিনী তথা পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ যাদের মাধ্যমে নির্বাচনী আইন প্রয়োগ হবে বিগত ১৬ বছর যাবত আমরা দেখেছি তারা একজন স্বৈরশাসক ও একনায়কের আঙুলী হেলনে পরিচালিত হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে সবকিছু যার নিয়ন্ত্রণে ছিল, তার মনোবান্ছা পূরণ না করে হঠাৎ করে একদিন নির্বাচন কমিশনের কথিত যোগ্য লোকের কথায় উঠবস করবে তা পাগলেও বিশ্বাস করবে না।

সেই জন্যেই দরকার রাষ্ট্র সংস্কার। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি অংগ, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চলবে আইনের মাধ্যমে, কোন ব্যক্তির কথায় বা ইংগিতে নয়। যদি তা না হয় অর্থাৎ আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে কোন ফ্যাসিস্টের মুখের কথায় সবকিছু পরিচালিত হয়, তাহলে একজন দুদকের পরিচালকের রিপোর্টে কিংবা একজন অডিটর জেনারেলের প্রতিবেদনেই সরকার পতন হয়ে যাবে, সেইরকম ব্যবস্হা চালু করার নামই রাষ্ট্র সংস্কার। অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুদক, অমবাডসম্যান, অডিটর জেনারেল ইত্যাদি একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অর্থাৎ সকলের যথাযথ সংস্কার করে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা একজন ব্যক্তির পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় সিস্টেমে ঢুকিয়ে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে যা যা পরিবর্তন প্রয়োজন সেগুলো না করলে কোন লাভ হবে না। সংস্কার ব্যতিত বর্তমান বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোতে যত যোগ্য লোকই নিয়োগ দেয়া হোক না কেন তারা ব্যর্থ হতে বাধ্য।

কিন্তু সেই ধরনের সংস্কার করতে হলে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কারের প্রতিটি ধাপে অংশীদার করতে হবে। তার কোন আলামত আজ পর্যন্ত বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাজকর্মে আমরা দেখতে পারছি না।

বিগত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ যুবলীগ যেসব অপকর্মে লিপ্ত ছিল তারই হুবহ প্রতিধ্বনি আমরা অন্য নামে অন্যদের কাজ কর্মে এখন দেখতে পাচ্ছি যা হাজারো শহীদের রক্তের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতার সামিল।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles