কানাডায় আসা আর হলো না বুঝি! কানাডার সরকার ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের নাড়ি ধরে আবার টান দিয়েছেন। আপনারা চমকে উঠলেন তো?
ঘটনা বলছি শুনুন।
আগে কী হতো: আগে এ রকম হতো যে, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা দেশ থেকেই ধরেন তিন-চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়ে কানাডার কোনো ইউনিভার্সিটিতে এ্যাডমিশন নিয়ে পড়তে আসতেন। সোজা কথা। এর একটা কারণ আছে। ইউনিভার্সিটিতে ব্যাচেলর পড়তে আসার আবেদন করলে একটু সহজে বা তাড়াতাড়ি ভিসা পাওয়া যায়, দুই বা এক বছরের ডিপ্লোমা পড়তে আসার চেয়ে। তো এই হলো কারণ। এই কারণে অনেক স্টুডেন্টরা করতেন কী, তারা সোজাসুজি কোনো একটা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে কানাডায় চলে আসতেন। তারপর তারা কী করতেন বা করেছেন শোনেন। ওনারা ঐ চার বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রি বাদ দিয়ে, ইউনিভার্সিটি চেঞ্জ করে একেবারে প্রভিন্স বদলে অন্য প্রভিন্সে এসে কোনো একটা কলেজে দুই বছর মেয়াদী ডিপ্লোমাতে ভর্তি হয়ে গেছেন বা যাইতেন আর কি।
এক্ষেত্রে আগের ঐ ইউনিভার্সিটিতে যে অর্থ নিয়োগ করা হয়েছিল এক বা দুই সেমিস্টারের ফিস, সেটা আর রিটার্ন পাওয়া যেত না। তো না যাক। তাতে কী হুঁ? টাকা তো আমি বাড়ি থেকে আনব বা এনেছিলাম। ভাবখানা সেই রকমই ছিল। তারা ইউনিভার্সিটি চেঞ্জ করে কলেজে এসে ডিপ্লোমা পড়তেন তার কারণ দুই বছরেই পড়া শেষ। তারপর PR এর আবেদন। তারপর সিটিজেন। অনেক সহজ হিসেব। খামাকা ঐ ইউনিভার্সিটিতে চার বছর ধরে পড়তে যায় কে? এসব ভেবেছেন তারা। আমার সঙ্গে কথা হয়েছে অনেকেই এক্কেবারে এই কথাগুলোই বলেছেন। এসব কোনো বানানো গল্প না।
এই তো গেল এক কাহিনি। আরেক কাহিনি হলো, আরেক দল করতেন কী তারা কলেজেই ডিপ্লোমা পড়তে এসেছেন। তারপর তারা পড়া ঐ পাশে রেখে বেদম কাজ করতেন। ফলে যে বিষয়ে পড়তে এসেছিলেন তা পড়ার অত সময় থাকত না। আর ফেল করলে তো শেষ। বাড়ি যেতে হবে ফিরে। অন্য দিকে চাপ। ফলে অনেকেই পড়ার বিষয় টুপ করে বদলে ফেলতেন। এমনকি অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যেতেন।
নতুন নিয়ম চালু হয়েছে তাতে কী আছে?
আগের কাহিনি তো সবাই বুঝতে পেরেছেন আশা করি। এসব কাহিনি সরকারও ভালোভাবে বুঝে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে নতুন নিয়ম চালু করেছেন।
সেটা কী: সেটা হলো স্টুডেন্টরা যে Designated Learning Institutions (DLIs)এ পড়তে আসবেন সেই প্রতিষ্ঠানেই পড়তে হবে এই হলো এক। যদি না পড়তে চান ধরেন পাল্টাইয়া অন্য কোথাও যেতে চান, তাহলে পুরোনোটা পাল্টানোর আগেই ফের নতুন করে স্টাডি পারমিট নিতে হবে সরকারের কাছ থেকে। এটাকে বলা হচ্ছে importance of integrity of the International Student Program (ISP)।
Minister of Immigration, Refugees, and Citizenship, Marc Miller বলেছেন,
“We expect institutions to support our efforts to preserve the integrity of the International Student Program.”
এটাই শেষ মনে করেছেন? না। বলা হয়েছে DLI স্টুডেন্টদের compliance মনিটরিং করে সরকারকে রিপোর্ট করতে হবে। যদি DLI রিপোর্টিংয়ে ফেল করে তাহলে যা হবে তা হলো;
acceptance letters face consequences, including a suspension from accepting new international students for up to one year.
কানাডায় আর আসা হলো না বুঝি!
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।
টরন্টো, কানাডা