১৯৮৯ সালে আমেরিকার নতুন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ তার মন্ত্রীসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করেছিলেন টেক্সাসের প্রাক্তন সিনেটর জন টাওয়ারকে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীকে সিনেট ভোটে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কারণ জন টাওয়ার অতিরিক্ত মদপান ও নারী কেলেংকারীতে অভিযুক্ত ছিলেন এবং এফবিআই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করছিলো সেই সময়।
কাজেই নুতন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ তাকে মন্ত্রী বানাতে পারে নি।
একই রকমভাবে একটি নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স চেক, মদ্যপান এবং যৌন হয়রানির অভিযোগে এখন আমেরিকার নুতন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডার ম্যাট গেটজকে অ্যাটর্নি জেনারেল বানাতে পারছেন না। কারণ মিঃ গেটজ একবার নারী পাচার ও যৌন কেলেংকারীর জন্যে আমেরিকার বিচার বিভাগ কর্তৃক ফেডারেল তদন্তের বিষয় ছিল – কাজেই সেই ব্যক্তি কি করে সেই বিচার বিভাগের এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন? যদিও গেটজ বারবার অস্বীকার করছেন যে তিনি কোন অন্যায় করেন নি এবং বলেছেন যে তিনি নির্দোষ। কিন্তু এফবিআই ফাইল, যা কখনো প্রকাশ করা হয়নি, তার নিশ্চিতকরণ সিনেট শুনানিতে আসতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
অর্থাৎ আমেরিকার মত মহাপরাক্রমশালী একটি দেশের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন প্রেসিডেন্টও ইচ্ছে করলেই কাউকে তার মন্ত্রী সভায় স্হান দিতে পারেন না। মনোনীত বা প্রস্তাবিত প্রত্যেক মন্ত্রীকে তাদের জীবনের অতীত ইতিহাস কষ্ঠি পাথরে যাচাই করে অর্থাৎ সিনেট শুনানীর মধ্যে দিয়ে পাস করে তবেই নিয়োগ ফাইনাল হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক গনতন্ত্রে কোন ব্যক্তি বা কর্তার ইচ্ছায় কীর্তন হয় না। ব্যক্তি নয়, সিস্টেম বা প্রতিষ্ঠান বড়। বাংলাদেশে সংস্কার কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো কি সেই রকম প্রতিষ্ঠান কায়েম করতে সক্ষম হবেন? তাদের কি আসলেই প্রকৃত সংস্কার সম্পর্কে ধারণা আছে? থাকলে সেই আলোচনা কোথায়? জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সেই আলোচনায় এখনি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না কেন?
(পাদটীকাঃ আমেরিকায় মন্ত্রীদেরকে সচিব বলা হয়, বুঝতে সুবিধার জন্যে মন্ত্রী বলা হয়েছে)
স্কারবোরো, কানাডা