-5.5 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ, পৃথিবীর কী হবে?

দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ, পৃথিবীর কী হবে?

চাঁদ প্রতি বছর পৃথিবী থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে। অবশ্য দূরে সরে যাওয়ার হার খুব কম। বছরে মাত্র ৪ সেন্টিমিটারের মতো। কিন্তু দূর ভবিষ্যতে এটা অনেকটাই দুরে সরে যাবে।

- Advertisement -

ফলে পৃথিবীতে প্রাণ ধারণই হয়তো কঠিন হয়ে পড়বে তখন। কারণ, পৃথিবীতে প্রাণ ধারণের জন্য যতগুলো বিষয় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে, চাঁদের অবস্থান এর মধ্যে অন্যতম। তাই চাঁদ ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণ টিকে থাকা অসম্ভব।

পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক অনেকটা নৃত্যের তরঙ্গের মতো।

চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, একই সময়ে পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে ঘোরে। তবে এই ‘তরঙ্গে’ পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর আকর্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চাঁদের মহাকর্ষ শক্তি পৃথিবীর সমুদ্রের ওপর প্রভাব ফেলে। চাঁদ যখন পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসে, তখন চাঁদের আকর্ষণে সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠে।

এর ফলে সমুদ্রে জোয়ার হয়। কিন্তু পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে এই জোয়ারের পানি চাঁদের সরাসরি নিচে থাকে না। এটি কিছুটা এগিয়ে যায়।

এই সামান্য এগিয়ে থাকা জোয়ার চাঁদের ওপর মহাকর্ষণ বল প্রয়োগ করে। এই ব্যাপারটা চাঁদকে ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে দূরে ঠেলে দেয়।

বিজ্ঞানীরা একে ‘জোয়ার বল’ বা টাইডাল ফোর্স বলেন।
প্রতি বছর চাঁদ পৃথিবী থেকে প্রায় ৩.৮ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ১.৫ ইঞ্চি দূরে সরে যাচ্ছে। এটা খুব ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু কোটি কোটি বছর পরে এর প্রভাব অনেক বড় হবে।

প্রায় দুশো কোটি বছর পরে চাঁদ এতটাই দূরে সরে যাবে যে, এটি আর সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটাতে পারবে না। এখন যেমন চাঁদ সূর্যের সামনে পুরোপুরি এসে পড়ে, তখন তা আর সম্ভব হবে না।

পৃথিবীর ঘূর্ণনও ধীরে ধীরে কমে যাবে। বর্তমানে এক দিন ২৪ ঘণ্টার হলেও ভবিষ্যতে এক দিন আরও লম্বা হয়ে যেতে পারে।

চাঁদ যে দূরে সরে যাচ্ছে বিজ্ঞান কীভাবে এটা জানল?

বিজ্ঞানীরা চাঁদে পৃষ্ঠে বিশেষ প্রতিফলক বসিয়ে রেখেছেন। লেজার রশ্মি পাঠিয়ে তাঁরা চাঁদের সঠিক দূরত্ব পরিমাপ করেন। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনে এই প্রতিফলক স্থাপন করা হয়। সেই পরিমাপ থেকেই জানা যায়, চাঁদ ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে।

চাঁদ ও পৃথিবীর সম্পর্ক এক অদ্ভুত ও সুন্দর ভারসাম্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যদিও চাঁদ দূরে সরে যাচ্ছে, এই পরিবর্তন এত ধীর যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনো প্রভাব পড়ে না। তবে ভবিষ্যতের পৃথিবী ও চাঁদের সম্পর্ক কেমন হবে, তা বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে ক্রমাগত জানা যাবে।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অর্থাৎ ক্যালটেকের গ্রহ বিজ্ঞানী ডেভিড স্টিভেনসন, বলেন, ‘চাঁদের এই দূরে সরে যাওয়া আমাদের সৌরজগতের ইতিহাস এবং পৃথিবী-চাঁদের সম্পর্ক বুঝতে সহায়ক। এই ধীর প্রক্রিয়া থেকেই আমরা জানি পৃথিবীর দিনগুলি অতীতে ছোট ছিল এবং ভবিষ্যতে আরও বড় হবে।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles