
বিগত কয়েক দশকে সমাজে আধুনিকতার প্রভাব বেড়েছে, যার ফলে সম্পর্কের ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। প্রেমের ক্ষেত্রে ছেলেরা আধুনিক এবং স্বাধীনচেতা মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হলেও, বিয়ের ক্ষেত্রে শান্ত, সৃষ্ট ও নম্র মেয়েদের চাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এর পেছনে কয়েকটি কারণ বিশ্লেষণ করা যেতে পারে:
১. পারিবারিক মানসিকতা ও সামাজিক চাপ
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সমাজে পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশা বিয়েকে একটি গুরত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখে। ছেলেরা পারিবারিক চাপ বা সামাজিক সম্মানের কথা মাথায় রেখে এমন মেয়ে চায়, যিনি পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারবেন এবং সমাজের রীতি মেনে জীবনযাপন করবেন।
২. জীবনসঙ্গীর প্রতি নির্ভরতার ধারণা
বিয়ে জীবনের একটি স্থায়ী সম্পর্ক। ছেলেরা মনে করেন, শান্ত ও নম্র মেয়েরা জীবনে বেশি স্থিতিশীলতা ও নির্ভরতা আনতে পারে। তাদের বিশ্বাস, এমন মেয়েরা সংসারে বেশি যত্নশীল এবং দায়িত্বশীল হবেন।
৩. আধুনিকতার প্রতি দ্বৈত মনোভাব
অনেক ছেলেরা প্রেমে আধুনিক মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হন কারণ আধুনিকতা ও ব্যক্তিত্ব তাদের কাছে রোমাঞ্চকর এবং আকর্ষণীয় লাগে। তবে, বিয়ের ক্ষেত্রে তারা মনে করেন যে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং পারিবারিক বন্ধনের ওপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই তারা বেশি রক্ষণশীল পছন্দ করেন।
৪. সংস্কৃতি ও রীতির প্রভাব
বাংলাদেশি সমাজে মেয়েদের শান্ত, সৃষ্ট ও নম্র হওয়া “আদর্শ” নারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এই মানসিকতা বহুদিন ধরে প্রচলিত এবং ছেলেরা প্রায়শই এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়।
৫. নিরাপত্তার মানসিকতা
অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরা মনে করেন, শান্ত মেয়েরা ঝগড়াঝাটি বা সমস্যা কম করবে এবং সংসারে মানসিক শান্তি বজায় রাখবে।
সমাধান এবং পরিবর্তনের পথ
এই দ্বৈত মানসিকতা আসলে সমাজের পিতৃতান্ত্রিক কাঠামো ও লিঙ্গভিত্তিক ভূমিকার ফলাফল। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দরকার সচেতনতা এবং মেয়েদের স্বাধীনতাকে সম্মান করা। সম্পর্ক গড়ে ওঠা উচিত পারস্পরিক বোঝাপড়া, সম্মান এবং সমান অধিকারের ভিত্তিতে।
এতে ছেলেদের ভাবনাতেও পরিবর্তন আসবে এবং তারা বিয়ে ও প্রেমের ক্ষেত্রে একই মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসবে।