মুলত দুটো প্রধান কারণে বাংলাদেশের মানুষ ভারতে যায়। চিকিৎসা ও ভ্রমণ। ব্যবসার কারণেও যায় তবে সেটার সংখ্যা কম।
ভারতের বিজেপি সংঘর্ষ সমিতির লোকেরা বলেছে বাংলাদেশের মানুষকে হোটেল দিবে না এবং তাদের পতাকাকে নমস্কার না করলে চিকিৎসা দিবে না।
দুটো বক্তব্যই চরম বিদ্বেষপ্রসূত হলেও আমি মনে করি বাংলাদেশের জন্যে ভাল খবর। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্হার দিকে সিরিয়াসলি নজর দেবার সময় এসেছে। আমাদের দেশের চিকিৎসকরা ভারতের চেয়ে কম জ্ঞানী নন। কিন্তু এক শ্রেণীর অর্থ ললুপ মানুষের জন্যে চিকিৎসা ব্যবস্হা চরম অরাজকতাপূর্ণ। সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে।
আর বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আছি আমরা যারা এখনো বাংলাদেশটাকেই ঠিকমত ঘুরে দেখি নাই। পাশে রয়েছে নৈসর্গিক নেপাল, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্হা ও পর্যটন শিল্প উন্নত করলে, চিকিৎসা ব্যবস্হা দুর্নীতিমুক্ত ও সহজলভ্য করলে দেশের মানুষের ভারত যাবার প্রয়োজন হবে না। এর জন্যে প্রয়োজন একজন জাতীয়তাবাদী নেতার মন্ত্রমুগ্ধ বাঁশির হুইসেল।
অবশ্য আরো একটি বিষয় রয়েছে তা হলো, দেশেই পিঁয়াজ, রসুন, আলু মরিচের উৎপাদন বাড়ানো।
ভারতের উপর নির্ভরশীলতা যত কমাতে পারবো ততই আমাদের উপর তাদের খবরদারী কমে যাবে। দেশকে আত্মমর্যাদাশীল করতে এবং কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে চিকিৎসা ব্যবস্হা, পর্যটন শিল্প এবং কৃষি উৎপাদনে নজর দেবার এখন সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সময়।
ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী জাতীয় ঐক্য তৈরী করতে বরং আমি মনে করি দেশের ছাত্র সংগঠনগুলো অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। প্রথমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ৩৫ ছাত্র সংগঠন নিজেরা বৈঠক করেছিলেন এবং গতকাল ২৮ ছাত্রসংগঠনের মতবিনিময় এবং দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে এক থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করার খবরটি নিঃসন্দেহে প্রেরণাদায়ক।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যাদেরকে এই ২৮ ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে আনতে পেরেছে সেটা এ মুহুর্তের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসুন দেখি কারা সেখানে ছিলঃ
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত রাজধানীর কাঁটাবনের একটি রেস্তোরাঁয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ ২৮টি ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের এই সভা হয়। সভায় অংশ নেওয়া অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্রপক্ষ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জেএসডি ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ (বিসিএল), রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রসমাজ ও জাতীয় ছাত্রসমাজ (পার্থ)৷
ফলে বলা যায় দুটো ভিন্ন জায়গায় ও তারিখে বসলেও এই ৩৫ এবং ২৮ ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র ঐক্য তৈরী করতে যতটা সফল হয়েছে, মুল রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐক্য তৈরী করতে এখন পর্যন্ত অনেক পিছিয়ে আছে অথবা বলা যায় ব্যর্থ হয়েছে।
স্কারবোরো, কানাডা