
আপনারা মনে করতেছেন এই দুর্যোগ আবহাওয়া সংক্রান্ত কিছু হবে তাই না? আসলে না। এটা রাজনৈতিক বা রাস্ট্রীয় দুর্যোগ। কানাডার পলিটিক্যাল ইস্যু আবার বেশ গরম হয়ে উঠেছে। আর ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন অনেকের পছন্দের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
দুর্যোগটা আবার কী নিয়ে হলো:
ট্রুডোর কেবিনেটের deputy prime minister and minister of finance যিনি, তাঁর নাম হলো Chiystia Freeland.
তাঁকে সবাই Freeland বলে থাকেন। আমি যদি বাংলা করি তাহলে ‘ মুক্ত ভূমি ‘ হবে।
গতকাল এই Freeland করেছেন কী, তিনি পদত্যাগ করেছেন। এরপর থেকে কানাডিয়ান মিডিয়ায় একেবারে হট্টগোল লেগে গেছে। একে তো দীর্ঘদিন যাবৎ ট্রুডোকে বেশিরভাগ পলিটিশিয়ানরা স্টেপ ডাউন বা পদত্যাগ করার দাবি জানাচ্ছেন, তার ওপরে একের পর এক কেবিনেট সদস্যদের পদত্যাগ, বাই-ইলেকশনে বিভিন্ন প্রভিন্সে ট্রুডোর দলের ক্যান্ডিডেট হেরে যাওয়া ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে ট্রুডোকে প্রেসার কুকারে কুক করা হচ্ছে। তবে তিনি নির্বাচন পর্যন্ত থাকবেন এটাই ওনার শেষ কথা ছিল।
শেষ কথা বলে কোনো কথা থাকে না। মূহুর্তে মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে আর যাচ্ছেও তাই। ট্রুডোর finance minister মুক্ত ভূমি বা ফ্রিল্যান্ডের চাকরি ছেড়ে দেওয়া আরেক গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মুহূর্তে ট্রুডোর জন্য।
তবে আপনারা কী ভাবছেন? মুক্ত ভূমি কি নিজের ইচ্ছাতেই চাকরি ছাড়ছেন? মোটেও তা নয়।
ট্রুডো নাকি তাঁকে প্রধান ইকোনিমিক এডভাইজার হিসেবে আর রাখতে চান নি। মুক্ত ভূমি কী বলেছে শোনেন; “Freeland said her decision came after Trudeau told her last week that he no longer wanted her to be the government’s top economic adviser.”
ট্রুডো তাঁকে lesser position অফার করেছিলেন। তাতে
মুক্ত ভূমি অভিমান করে চাকরিই ছেড়ে দিয়েছেন। কিছুটা আমাদের বাঙালি ইমোশনের মতো। কে জানে ট্রুডো তাঁকে চাকরিই ছাড়তে বলেছিলেন কিনা! এদিকে ট্রুডো মুক্ত ভূমির পদত্যাগপত্র একহাতে গ্রহণ করেছেন, অন্য হাতে Dominic LeBlanc কে ফেডারেল ফাইনান্স মিনিস্টার হিসেবে শপথ করিয়েছেন। ট্রুডো যখন ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে এক ঝটিকা সফরে ট্রাম্পের ফ্লোরিডায় রিসোর্ট Mar-a-Lago’তে গিয়েছিলেন ভ্যাট আরোপের বিষয়ে কথা বলতে, তখন কিন্তু ট্রুডো
মুক্ত ভূমিকে সঙ্গে নেন নি। নিয়েছিলেন এই নতুন অর্থ মন্ত্রী Dominic LeBlanc কে।
এদিকে মুক্ত ভূমি ট্রাম্পের তরফ থেকে চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাট ইস্যুর মোকাবেলায় ট্রুডোর সমালোচনা করেছেন।
যাই হোক মুক্ত ভূমির পদত্যাগ ইস্যুতে পরিস্থিতি ঘোলাটে। বিরোধী দলগুলো তো বটেই, ট্রুডোর নিজের দলের নেতা-কর্মীরা বলা যায় উঠেপড়ে লেগেছেন ট্রুডোকে পদত্যাগ করানোর জন্য।
বলা হচ্ছে ‘Canada overshoots deficit target by C$20 billion as finance miniter resign.’ তাছাড়া Fiscal deficit for year ended March at C$61.9 billion.”
এই যে deficit এর কথা বলা হচ্ছে এসব কি ট্রুডো বিদেশে পাচার করেছেন ভাবছেন? মোটেও তা নয়। তিনি বিভিন্ন সময়ে মানুষের বেনিফিটস দিয়েছেন। হাতটা একটু কন্ট্রোল করা উচিত ছিল এই যা। তবে এইসব বেনিফিটসের কারণে যে সরকারই আসুক deficit চলবেই। ভিজিট ভিসায় এসে asylum seek করলেই তো বেনিফিটস পাওয়া যায় বছরের পর বছর। কাজ না করে social এ বেনিফিটস পাওয়া যায় ইত্যাদি আরো কতো কী!
বিভিন্ন উত্তেজনায় আবারো ট্রুডোর দলের নেতারা গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত emergency caucus meeting করেছেন ট্রুডোর সঙ্গে। ট্রুডোর ভিন্ন কোনো মতামত এখনো জানা যায় নি।
কানাডার রাজনৈতিক আকাশে অস্থিরতা চলছে।
তবে ট্রুডো চলে গেলে conservative দলের নেতা Pierre Poilievre আসতে পারেন। তিনি আমার ব্যক্তিগতভাবে পছন্দের কেউ না। মানে তাঁর রাজনৈতিক বুদ্ধি, মানুষের কাছে একটা welcoming attitude এসব মোটেও আমাকে মুগ্ধ করতে পারে নি।
কানাডায় যে কোনো সময় এই মুহূর্তে যে কোনো একটা রাজনৈতিক পট বদলের খবর আসতে পারে। দেখা যাক কী হয়।
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।
টরন্টো, কানাডা