![ডিভোর্স ডিভোর্স](https://www.thebengalitimes.com/wp-content/uploads/2024/12/Picture19-2.jpg)
-যাকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি। সে অন্যের সংসারে এখনো আছে। তার পক্ষ থেকে কথা বলার জন্য তুই এসেছিস জিসান?
সারারাত ঘুম হয়নি একটু পর বিয়ের বাজারের উদ্দেশ্যে বের হতে হবে। শতাব্দী তোকে আমার কাছে পাঠিয়েছে এটা মানতে পারলাম, কারন সে হিতাহিত জ্ঞানহীন। তুই কোন আক্কেলে এসেছিস?
– আবির, তোর একটা মেয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া স্যাটেলড হয় গেলে কে এইসব চিন্তা করবে বল?
-শতাব্দী এখন এসেছে ওর স্বার্থে আমি ও অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থে ডিভোর্স দেয়া বউ নিয়ে সংসার শুরু করে দেই। ধর্ম, সমাজ বলতে কিছু নাই। দুনিয়ায় যখন যা মনে চাইলো তাই করলাম বিষয় টা এমন তোদের কাছে। তাছাড়া আমার জন্য তরু অপেক্ষা করছে।
– আবির,শতাব্দীর হাই প্রোফাইল ও এখনো গ্ল্যামারাস। দুনিয়ায় এমন অনেক বিরল ঘটনা আছে। তোর বউ নিয়ে তুই সংসার শুরু করবি,সমস্যা কিছু দেখছি না।
তরু কে আমি বুঝিয়ে বলবো,সে অবশ্যই বুঝতে পারবে।
– জিসান তুই কি গ্ল্যামার আর হাই প্রোফাইলের লোভে পরে গেছিস। শতাব্দী তো আমার বউ ছিল। আমি তাকে কম ভালোবাসিনি। গ্ল্যামার দিয়ে সংসার চললে রেখা কে নিয়ে অমিতাভ বচ্চন সংসার গোছাতো। তরু গ্ল্যামারা নাই কিন্তু যথেষ্ট স্মার্ট এবং কঠিন ব্যাক্তিত্বের নারী। তাকে এসব নিয়ে বুঝিয়ে বলা লাগবে না। সে এই কাহিনী শুনলেই দূরত্ব তৈরি করে ফেলবে। শতাব্দী নিজের কাঙ্ক্ষিত সুখের মোহে পরে আমাকে ছেড়ে গেছে। তরু তার এক্স হাসবেন্ডের কাঙ্ক্ষিত সুখের জন্য, তার সব কিছু ছেড়ে চলে এসেছে। ছেড়ে যাওয়া আর ছেড়ে চলে আসার মানে বুঝিস? তরু ইচ্ছে করলে আইনি ঝামেলায় যেতে পারতো, কিন্তু সে তা করেনি
তাছাড়া আমি তরু কে ভালোবেসে ফেলেছি।
– তোর মেয়ে আইজার কথা টা একবার চিন্তা কর।
– আইজার কথা চিন্তা করেই শতাব্দীর ফোন পেয়ে এতো রাতে ছুটে গিয়েছিলাম। সে আইজাকে আমার কাছ থেকে এতো দূরে সরিয়ে দিয়েছে। যেখানে আমার কোন অনস্তিত্ব-ই নেই। শতাব্দীর অনেক কিছু তোরা জানিস না তাই রিকুয়েষ্ট করছিস। সে এক সময় আমার স্ত্রী ছিল। সেই সম্মানের জায়গা থেকে সব কিছু গোপন রাখতে হচ্ছে।
জিসান চুপ করে আবিরের বেডের পাশের ডিভাইনে বসে আছে।
নিরবতা ভেঙে বললো-
-একটা সিগারেট দে,মাথা ধরে গেছে।
-নে,শতাব্দী তোকে ঘটকালির জন্য খুঁজে পেলো কোথায়?
– এই যুগে কেউ কাউ কে খুঁজে বেড়াতে হয় না।
– আচ্ছা তোর নিজের কি আক্কেল বলতো। যেখানে একজন নারী সতীনের সাথে থাকতে চায় না। তুই এসেছিস আমাকে সতীনের সংসার করাতে। এক বেডা আরেক বেডার সতীন।
আবিরের কথা শেষ হতেই তানভীর ফোন দিল-
-হ্যালো, আবির ঘুমে তুমি?
– না ভাইয়া।
-একটা বিষয়ে কথা হয়নি তোমার সাথে, তোমার কেনাকাটার কি করবো বলতো?
-আমার কিছু লাগবে না। তরু কে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি আপনারা কিছু কাপড়চোপড় নিয়ে নিবেন। বিশেষ করে ভাবির জন্য।
-আমাদের কিছু লাগবে না। শুধু শুধু খরচ বাড়ানোর দরকার নাই। তোমরা সুখী হও নিজদের নিয়ে তাতেই আমরা খুশী। আমার বোন টা কে ভালো রেখ প্লিজ,ও অনেক বড় আঘাত প্রাপ্ত। যদিও তুমি ও সেইম আঘাত পেয়েছো। আমি তোমাকে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। তোমাদের সবার জন্য কিছু কেনাকাটা করে নিও। হুটহাট বিয়ে সবাইকে তো আর চিনতে বা জানতে পারলাম না।
আবিরের বড় বোন ইন্ডিয়া বেড়াতে গেছে। মা মারা গেছে অনেক বছর। বাহিরে ঝুম বৃষ্টি। রাস্তার পাশে নারকেল গাছ গুলোর নাজেহাল অবস্থা। দুই আঙুলের মাঝে জ্বলন্ত সিগারেট ধরে জানালার বাহির চোখ রাখলো,আবির।
ছোট বোন নীলা টা ভগ্নি কে কোলে নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে বাসার গেইটের ভিতরে ঢুকেছে।
নীলা ফ্রেশ হয়ে এসে আবিরের হাতো মেহেদী পরাতে বসে গেলো। ভাগ্নী টা মামা মামা করে আবিরের ঘাড়ে দুই পা ঝুলিয়ে বসে পরলো।
নীলা বললো-
– ভাইয়া সকাল থেকে তো পরিবেশ ভালোই ছিল। হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। প্রকৃতি কিসের সংকেত দিচ্ছে কে জানে!
প্রেম অনল #পর্ব১২