
শেখ রেহানাকন্যা টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে বিতর্ক চলছেই। বাংলাদেশে একটি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে নেতিবাচকভাবে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে তিনি সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন ১৯ ডিসেম্বর। তবে এবারই প্রথম না, চারবারের নির্বাচিত এমপি ও বর্তমান সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ ব্রিটিশ গণমাধ্যমে এর আগে আরও বেশ কয়েকবার হয়েছে। তিনি প্রথমবার নেতিবাচকভাবে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন চ্যানেল ফোরের একজন প্রযোজককে তার প্রেগন্যান্সি নিয়ে মন্তব্য করে।
২০১৭ সালে, যখন ইরানে আটক ব্রিটিশ নাগরিক নাজানিন জাঘারি-রাটক্লিফের মুক্তির জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছিল, তখন চ্যানেল ফোর নিউজের একটি সাক্ষাৎকারে টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন তিনি তার খালা শেখ হাসিনাকে গুম, হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেননি। সেই প্রশ্নের উত্তরে টিউলিপ দাবি করেন তিনি বাংলাদেশি নন। এরপরই তিনি সেই প্রশ্নকর্তা নারী প্রযোজক যিনি তখন গর্ভবতী ছিলেন তার প্রতি ‘হুমকিমূলক’ আচরণ করেছিলেন। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে টিউলিপ সিদ্দিক এ বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। টিউলিপ আবারও বিতর্কিত শিরোনাম হয়েছিলেন ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা গুমের অভিযোগ নিয়ে টিউলিপের নীরবতার কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ব্রিটিশ বাংলাদেশি ট্রেইনি লইয়ার মীর আহমেদ বিন কাসিমের খোঁজ নিয়ে টিউলিপের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেন এমন প্রশ্ন তুলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম।
চলতি বছর ব্রিটেনের জাতীয় নির্বাচনের পর ব্রিটেনের আর্থিক খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তার বিরুদ্ধে আয় লুকানোর অভিযোগ ওঠে। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আয়ের বিষয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার বিষয়টি ব্রিটিশ গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়। পার্লামেন্টের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা লন্ডনে তার একটি ফ্ল্যাট থেকে ভাড়ার আয় পার্লামেন্টে সময়মতো জানাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে এই তদন্ত করে। তবে টিউলিপ তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেন ও পরে তাকে এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চলতি বছর ১৭ আগস্ট ডেইলি মেইলের অনুসন্ধানে উঠে আসে টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর আরও একটি অভিযোগ। ডেইলি মেইল টিউলিপের নর্থ লন্ডনের বর্তমান আবাসস্থল নিয়েও প্রশ্ন তোলে। তারা তথ্য জোগাড় করে যে টিউলিপ বর্তমানে ২ মিলিয়ন মূল্যের একটি বাড়িতে বসবাস করছেন, যা একজন প্রভাবশালী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাজিম করিমের মালিকানাধীন। ওই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক মহলে ভিআইপি মর্যাদাপ্রাপ্ত এবং টিউলিপের খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ মানুষ বলে পরিচিত ছিলেন।
প্রশ্ন উঠে টিউলিপ যে বাসায় থাকেন সেখানে সঠিক ভাড়া দিচ্ছেন কি না? যদি ভাড়া কম দেন তাহলে সেটা কত কম দিচ্ছেন ইত্যাদি। সর্বশেষ আবারও বিতর্কিত হলেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নাম এসেছে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিকেরও। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এই তদন্ত করছে। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন