দেশে এমন কিছু ঘটনা ঘটছে বা ঘটানো হচ্ছে যাতে বিশ্ব দরবারে ও দেশের জনগণের কাছে মনে হয় যে ইউনুস সরকার ব্যর্থ, আগের সরকারই ভাল ছিল। হিন্দু ইস্যু, নারীদের উপর আক্রমন, মাজার ভাঙা, কবরস্হানে আগুন জ্বালানো, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার চেষ্টা এবং দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা এসব ঘটনা অন্য কোন কারণে বা এমনি এমনি ঘটে চলেছে বলে বিশ্বাস করার কারণ নেই।
উপরের ঘটনাগুলো ঘটিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে যে দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়, নারীরা নিরাপদ নয়, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বিশেষত হিন্দু ও খৃষ্টানরা নিরাপদ নয়। যাতে প্রতিবেশী ভারত ও পশ্চিমা দেশগুলো নাখোশ হয় এভাবেই প্লটগুলো সাজানো হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।
আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুজনকে পিটিয়ে মারার পর প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে যে কোটা আন্দোলনকারী ছাত্ররা আসলে মেধাবী নামধারী ভয়ংকর ঘাতক। আগের সরকারের আমলে যা কিছুই ঘটুক না কেন, দুর্নীতি, খুন, গুম, বৈষম্য কোন কিছুতেই যারা কখনোই টু শব্দটি কখনো করে নি, নীরবে এবং প্রকাশ্যে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণ করে ধন্য হয়েছেন তারা এখন এমন একটি সরকারের বিরুদ্ধে কথায় কথায় তীব্র সমালোচনার বাণ ছুড়ছেন যার লক্ষ্য হলো ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানকে অস্বীকার করে একটা নির্দলীয় ক্ষণস্হায়ী দুর্বল সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফ্যাসিবাদি ব্যবস্হা ফিরিয়ে আনা। যারা এহেন অন্তর্জ্বালায় দিবিনিশি জ্বলছেন তাদের অতীত প্রমাণ করে তারা অন্তর্ঘাতমুলক কর্মকান্ডে সিদ্ধহস্ত। কাজেই ইউনুস সরকারকে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দের প্রধান কাজ হলো আইন শৃংক্ষলা পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার কাজটাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ও গুরুত্ব দেয়া। আবারও বলছি, সংস্কার কাজ নয়, ষড়যন্ত্র ঠেকানো ও আইন শৃংক্ষলা পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রন করাই অন্তর্বর্তী সরকার ও তার সমর্থকদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হতে হবে। তা না হলে সংস্কার কাজ ফেলে রেখে যেনতেন প্রকারে একটা নির্বাচন দিয়ে চলে যেতে হবে যা হবে দেশের মানুষের মারাত্মক আশা ভংগের কারণ।
কাজেই আমি মনে করি গণ-অভ্যুত্থানকে ধারণ করে এমন একজন শক্তিশালী স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়ে দ্রুত গতিতে প্রতিটি থানায় শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলে, গোয়েন্দা সংস্হাগুলোকে দ্রুত আরো কার্যকর করে অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র আতুঁর ঘরেই বিনষ্ট করে দিতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের সারা দেশে অযথা ট্যুর না দিয়ে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোথায় কি ঘটছে, প্রতিটি হলে হলে কড়া নজরদারীর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়টাকে নির্বিঘ্ন রাখার ভ্যানগার্ডের দায়িত্বপালন করতে হবে।
সবশেষে বলবো, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরী করার প্রয়াস নিতে শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে এবারের পূজার আগেই কিছু সংখ্যক ইলিশ মাছ ভারতে পাঠানোর ব্যবস্হা করা যেতে পারে।
মনে রাখা দরকার রাজনৈতিক শত্রুরা বসে নেই, তারা দুর্বলও নয়। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নিতে পারলে পস্তাতে হবে নিশ্চিত।
স্কারবোরো, কানাডা