
শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর তার স্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাহিদা সুলতানা যূথী, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হন। রাজনীতিতে অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠা যূথী ‘ম্যাডাম যুবলীগ’ নামে পরিচিতি পান।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজের জন্য আলাদা কক্ষ দখল করে সারা দেশের জেলা-উপজেলা কমিটি গঠনের নামে পদ বিক্রি, দখলবাজি ও চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। বিত্তশালীদের লক্ষ্য করে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে যুবলীগের বিভিন্ন পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন। কেউ কেউ প্রত্যাশিত পদ পেলেও অনেকে পদবঞ্চিত হয়েও টাকা ফেরত পাননি। টাকা ফেরত চাইলে মামলার হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হতেন।
যূথীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জামিন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতা খাটিয়ে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার চেষ্টা করেন, যা আদালতপাড়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি করে। যুবলীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করিয়ে সংগঠনের স্বার্থকে নিজের ব্যক্তিগত লাভের জন্য ব্যবহার করতেন তিনি।
২০১৯ সালে শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর যূথীর উত্থান ঘটে। তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির ফলে সারা দেশে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশ ছেড়ে কানাডায় পাড়ি জমান যূথী। পরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান শুরু করেন। অন্যদিকে, শেখ ফজলে শামস পরশ ভারতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে তার স্ত্রীর কাছে যাওয়ার পরিকল্পনায় আছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
যূথীর এসব কর্মকাণ্ডের কারণে তার স্বামী পরশকেও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হয়। তার বিরুদ্ধে সারা দেশে মামলাও হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উস্কানির অভিযোগে পরশ ও তার অনুসারীরা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
পাবনার মেয়ে যূথীর শৈশব কাটে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে ঢাকায় এসে তিনি আইন পেশায় যুক্ত হন। ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।