7.8 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

শারীরিক সম্পর্কের পর অস্বীকার, ছোট ভাই বিয়ে করতে চাওয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা

শারীরিক সম্পর্কের পর অস্বীকার, ছোট ভাই বিয়ে করতে চাওয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যা - the Bengali Times
প্রতীকী ছবি

প্রেম করে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হলেও বিষয়টি সালিস দরবারে প্রেমিক অস্বীকার করে। পরে ছোট ভাই সব দোষ স্বীকার করে বিয়ে করতে চাইলে অভিমান করে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

- Advertisement -

পুলিশ ও অভিযোগে জানা যায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা কাইমুদ্দিন শিকদারের কান্দি গ্রামের চানমিয়া মোল্লার মেয়ে চরবাঁচামারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী হাফিজা আক্তারের (১৪) সঙ্গে তার প্রতিবেশী আবুল কালাম সরদারের বড় ছেলে পিয়ার সরদারের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একবার হাফিজার গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগও করে তার পরিবার।

এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে স্থানীয়ভাবে সালিস দরবার হয়। সালিসে অভিযুক্ত পিয়ার সরদার নিজের দোষ অস্বীকার করলে তার ছোট ভাই আলী সরদার সবার সামনে নিজেকে হাফিজার প্রেমিক ও দোষী বলে দাবি করেন এবং হাফিজাকে বিয়ে করতে রাজি হন। কিন্তু হাফিজা কোনোভাবেই আলীকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না। সে বারবার বলছিল, ‘আমাকে নষ্ট করেছে পিয়ার সরদার।

আমি কেন আলীকে বিয়ে করব? আমি যদি বিয়ে করি তবে পিয়ারকেই করব।’

একদিকে প্রেমিকের ভালোবাসার কথা অস্বীকার আর অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে প্রেমিকের ছোট ভাইয়ের সব দোষ স্বীকার করে বিয়ে করতে চাওয়ায় কয়েক দিন ধরেই অন্যমনস্ক ছিল হাফিজা। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দেয় হাফিজা। পরিবারের লোকজন হাফিজাকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে পিয়ার হোসেনের পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত পিয়ার সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার কথা রয়েছে। এ কারণেই তার পরিবার স্থানীয় সালিসদের সঙ্গে যোগসাজশে পিয়ারের ছোট ভাই আলীকে দোষী দাবি করায়।

হাফিজার ভাই সজীব মোল্লা বলেন, আমরা এলাকায় ন্যায়বিচার পাইনি। আমার বোন সম্পর্ক করছে কালাম সরদারের বড় ছেলে পিয়ার হোসেনের সঙ্গে। আমার বোনকে ধর্ষণ করেছে বড় ছেলে। অথচ সবাই মিলে বিয়ে দেবে ছোট ছেলে আলীর কাছে। এর কারণ মূল আসামি পিয়ার বিদেশ যাবে। তাই পরিকল্পিতভাবে পিয়ারের ছোট ভাই আলী নিজেকে দোষী দাবি করেছে। আর এ কারণেই আমার বোন আজ আত্মহত্যা করেছে। আমরা এই হত্যার ন্যায়বিচার চাই।

স্থানীয় মাহবুব হোসেন বলেন, পিয়ারের সঙ্গে হাফিজার দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্ক ছিল। একবার হাফিজার গর্ভপাতও ঘটায় পিয়ার। এ ঘটনা এলাকার অনেকেই জানত। এ নিয়ে সালিস বসলে সেখানে পিয়ার সব অস্বীকার করে। কারণ পিয়ার বিদেশ চলে যাবে। কিন্তু পিয়ারের ছোট ভাই আলী নিজেকে দোষী দাবি করে এবং হাফিজাকে বিয়ে করতে চায়। সালিসরাও সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে আলীকেই বিয়ে করতে বলে। এতে হাফিজা অনেক কষ্ট পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

নিহত হাফিজার মা নাছিমা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে নষ্ট করল পিয়ার। কিন্তু পিয়ার বিদেশ চলে যাবে বলে সালিসরা টাকা খেয়ে পরিকল্পিতভাবে পিয়ারের ছোট ভাই আলীর সঙ্গে হাফিজাকে বিয়ে দিতে বলে। এতে আমার মেয়ে বলত, এখন তো আমি এলাকায় মুখ দেখাতে পারব না। তারপর আজ চলেই গেল আমার মেয়ে। আমি এর বিচার চাই।

শিবচর থানার ওসি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, নিহত হাফিজার সঙ্গে পিয়ার সরদার নামে একজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছি। এখানে ধর্ষণের মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে।

 

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles