
ছয় মাস বয়সী আমেনা। অভিযোগ রয়েছে, শিশুটির কান্নায় তার মা ও পরকীয়া প্রেমিকের বিশেষ সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মা ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শিশু আমেনাকে অচেতন করেন। পরে বালিশ চাপা দিয়ে এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে শিশুটিকে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। পরে টানা এক মাস বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে পল্লবী থানার পুলিশ।
শিশু আমেনা হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নিহত শিশুর মা এবং প্রেমিক মো. জাফর (৩৬)।
গতকাল শনিবার পল্লবী থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
ওসি বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে রাজধানীর দিয়াবাড়ীর মেট্রো রেলের ১২৪ নম্বর পিলারসংলগ্ন লেকপার থেকে একটি ব্যাগের মধ্যে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় পুলিশ দেখতে পায়, শিশুটির গলায় আঘাতের দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে।
মামলাটি তদন্তের এক পর্যায়ে মৃত শিশুটির পরিচয় শনাক্ত হয়।
পরিচয় শনাক্তের পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার গভীর রাতে পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটির মাকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, পরে নিবিড় তদন্ত এবং ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে মো. জাফর নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির মায়ের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে শিশু হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। ওই রাতেই জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাঁরা দুজনেই বিবাহিত এবং পল্লবী এলাকায় বসবাস করেন। জাফর একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। শিশুটির মা আগে ওই গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে জাফরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ওসি জানান, ওই নারীর স্বামী মেকানিক হিসেবে কাজ করেন। স্বামী কাজের সূত্রে বাসার বাইরে থাকার সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়েছিলেন তিনি। গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে জাফর ওই নারীর বাসায় যান। শিশুটির কান্নার কারণে তাঁদের পরকীয়া প্রেমে বিঘ্ন ঘটে। এ জন্য শিশুটিকে প্রথমে স্যুপের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করা হয়।