
সাইফ আলি খানের বান্দ্রার বাড়িতে ঢুকে অভিনেতাকে ৬ বার ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান দুষ্কৃতিকারী। অসংখ্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীকে চিহ্নিত করা গেলেও, তাকে ধরা যাচ্ছিল না। বারবার জায়গা পরিবর্তন করায় অভিযুক্তের নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। ঘটনার ৭২ ঘণ্টা ধরে অন্তত ৩০০ পুলিশকর্মী সাইফের হামলকারীর খোঁজে ব্যস্ত ছিলেন। অন্তত ৬০০টি সিসিটিভিতে নজর রাখা হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত হামলাকারীকে ধরতে পুলিশের সহায়ক হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি। একটি পরোটা আর একটি পানির বোতল কিনে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে বিল দিয়েছিল অভিযুক্ত। তদন্তের সূত্র ধরে সেই পথেই একটি মোবাইল নম্বর হাতে আসে পুলিশের। তার পরেই ঘেরাও করা হয় মোহম্মাদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে। সাইফের বাড়ি ঢুকে চুরির চেষ্টা এবং সাইফের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশ ঠানে থেকে এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। টানা ৭০ ঘণ্টার অপারেশনের শেষে পুলিশের জালে এসেছে অভিযুক্ত।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ওরলির সেঞ্চুরি মিলের কাছে একটি খাবারের দোকান থেকে পরোটা ও পানির বোতল কিনেছিল শরিফুল।
কীভাবে খোঁজ মেলে হামলাকারীর
ঘটনার পর থেকেই লাগাতার সিসিটিভি ফুটেজে নজর রেখে চলছিল তদন্তকারী দল। বান্দ্রা রেল স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা মেলে অভিযুক্তের। তার পরে দাদর স্টেশনে একটি মোবাইলের দোকানে দেখা যায় তাকে। অভিযুক্তকে দেখা যায় সিসিটিভি ফুটেজে। সেখানে নগদে দাম মিটিয়েছিল অভিযুক্ত। সেখান থেকে কবুতরখানা, তার পরে ওরলিতে দেখা যায়। ওই এলাকায় নজর রাখতেই ওরলিতে সেঞ্চুরি মিলের কাছে একটি দোকানে স্পট করা হয় তাকে। সেখানে দোকান মালিকের সঙ্গে তাকে অনেকক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়। ওই দোকান মালিকের পরিচয় খুঁজে বের করে পুলিশ। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
নবীন এক্কা নামের ওই দোকান মালিকের বাড়ি খুঁজে বের করে পুলিশ। কিন্তু দেখা যায়, ওই বাড়িতে ভাড়ায় থাকেন এক্কা। এর পরে বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে এক্কার নম্বর নেওয়া হয়। সেই সূত্র ধরে এক্কার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত ডিজিটাল পেমেন্ট করেছে। সেই সূত্রেই শরিফুলের ফোন নম্বর হাতে পায় পুলিশ। তার পর থেকে ফোন নম্বর ধরে ট্র্যাকিং করা শুরু হয়।
সেই সূত্রেই খোঁজ পাওয়া যায়, ঠানের কাসারভারাভলী এলাকায় এক কন্ট্র্যাক্টরের কাছে কাজ নিয়েছিল শরিফুল। কিন্তু তার পরেই শরিফুলের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। তখন ওই এলাকা ঘিরে ধরে চিরুনি তল্লাশি চালাতে থাকে পুলিশ। সেই সময়েই এক পুলিশের টর্চের আলোয় খোঁজ পাওয়া যায় শরিফুলের। সে পালানোর চেষ্টা করলে তাড়া করে ধরা হয় অভিযুক্তকে।
কীভাবে সাইফের বাড়ি ঢুকেছিল শরিফুল
তদন্তে জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম আবাসনের পিছনের সিঁড়ি দিয়ে ৭-৮ তলা পর্যন্ত গিয়েছিল। তার পর এসি ডাক্টের মাধ্যমে সিসিটিভির নজর এড়িয়ে সাইফ আলি খানের ঘরের ফ্লোরে পৌঁছে যায়। শৌচাগারের জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে শরিফুল।
সূত্রের খবর, তদন্তে জানা গেছে এর আগে রেস্তোরাঁয় কাজ করত শরিফুল। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করেছিল। তার পরেও ওরলিতে একটি জায়গায় কাজ করেছিল। সেখানে ক্রেতার হীরার আংটি চুরির অভিযোগে তার চাকরি চলে যায়।