-8.2 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

ইয়া মানদের দে‌শে চার দিন

ইয়া মানদের দে‌শে চার দিন
ইয়া মানদের দে‌শে চার দিন

আঁকা-বাঁকা-উঁচু-নীচু পাহাড়ী পথ। গা‌ড়ি চালানো বেশ কষ্টসাধ‌্য।

ম‌ন্টে‌গো‌ বে থে‌কে ফির‌ছি ওল্ড হারবার সিটি‌তে। মা‌নে জ‌্যামাইকার উত্তর সীমান্ত টু‌রিষ্ট শহর থে‌কে দ‌ক্ষি‌নের ছোট এক‌টি শহ‌রে।

- Advertisement -

‌রেন্টাল কার। গাড়ি চালা‌চ্ছে বন্ধু নেসার। আমি ইউটিউবে গান ছে‌ড়ে‌ছি। বাংলা গান বাজ‌ছে গা‌ড়ির ও‌ডিওতে..

-লাঙ্গের আশা কইরা তোমার ভাতা‌রের ভাত চা‌ঙ্গে…

তোমার লা‌ঙ্গে তোমার লা‌ঙ্গে গো

মাঝ প‌থে নিয়া কোমড় ভা‌ঙ্গবে…

গান‌টি কার লেখা ও গাওয়া জা‌নিনা। ত‌বে আমার শুন‌তে ভা‌লোই লা‌গছিল। ভ‌্যা‌কেশন মু‌ডে  একেবা‌রে খা‌ঁটি বাঙালী খি‌স্তি গান!

নেসার গাড়‌ি চালায় ভা‌লো, কিন্তুু গ‌তি ঠিক রাখ‌তে পা‌রছেনা। ঘন্টায় যেখা‌নে আশি কি‌লো‌মিটার বে‌গে চালা‌নোর কথা, সেখা‌নে সে চালা‌চ্ছে একশো পাঁচ কি‌লো‌মিটার বে‌গে।

গা‌ড়ির পিছ‌নে স‌ি‌টে একজন জ‌্যামাইকান সহ‌যোগী ব‌সে আছেন পিছ‌নে গা‌ড়ির একটা জানালার কাঁচ না‌মি‌য়ে।  ‌সবগু‌লো দ‌রজা বন্ধ রাখ‌লে তার না‌কি দমবন্ধ হ‌য়ে আসে।

সে আমা‌দের‌কে সাহায‌্য করেই যা‌চ্ছে। তা‌কে ছাড়া আমরাও বের হইনা। প্রচুর ক্রিম‌নাল গ‌্যাং‌য়ের উপ‌স্থি‌তি সবখা‌নে। দোকানপাট লোহার খাঁচায় ব‌ন্দি। টাকাপয়সা ভিতর থে‌কে লেন‌দেন ক‌রে। ব‌্যাং‌কের গে‌টে  দুজন ক‌রে সস্স্ত্র দা‌ড়োয়ান দন্ডায়মান। একজনক‌রে গ্রাহক ঢুকা‌চ্ছে।

সে জন‌্য  সে সব সময় আমা‌দের সা‌থেই থা‌কছেন। আম‌া‌দের সি‌কিউরি‌টির জন‌্য। যা‌তে আম‌া‌দের কোন বিপদ না হয়। লোক‌টি  নেসা‌রের জ‌্যামাইকান  ক‌লি‌গের আত্নীয়।

ওর নাম হাও‌য়ে ডিক্সন।

অত‌্যন্ত ভা‌লো ম‌নের একজন মানুষ। বয়স সত্ত্বর।  এখন অবস‌রে আছে। মানুষ‌কে হেল্প ক‌রে সময় কাটায়।

ও‌কে যখনই জিজ্ঞসা করিঃ হাও‌য়ে, আর ইউ ও‌কে?

ওর উত্তর হল, ইয়া মান।

“মান” হল ম‌্যান। আর “ইয়া” মা‌নে ইয়েস।

ইয়া মান হল ব্রো‌কেন ইং‌লিশ।

হাও‌য়ের বয়স ৭০ বছর হ‌লে কী হ‌বে ও‌কে দেখ‌লে  ম‌নে হয় হি ইজ ইন লেইট ফর‌টিজ। গা‌য়ের রং একবা‌রে কুঁচকুঁ‌চে কা‌লো। হেংলাপাতলা গড়ন। পে‌টে মেদ‌ নেই। পাহা‌রের উপ‌রে তার বা‌ড়ি। ‌নি‌জের গা‌ড়ি নেই। গা‌ড়ি চালা‌নো না‌কি তার পছন্দ নয়। চোখ দু‌টো লাল। কা‌লো বিড়া‌লের চো‌খের মত।  ম‌নে হয় একজন খু‌নী।

কিন্তুু সে খুব যত্নশীল।

রাস্তায় মোবাইলটা হা‌তে নি‌লেই সে  ব‌লে উঠ‌বে, মোস্তা(মোস্তফা), পুট ইয়োর ফোন ইন দ‌্য পকেট, মান।

আমি ব‌লি, হটস্ রং?

সে ব‌লে, ক্রিমিনাল মান, ক্রিমিনাল। দে উইল গ্র‌্যাব ইউয়োর ফোন এন্ড রান এয়ো‌য়ে।

আমি ব‌লি, আর ইউ শিওর?

সে ব‌লে, ইয়া মান।

ভ‌য়ে ফোন‌টি প‌্যান্টের সাম‌নে প‌কে‌টে রে‌খে দেই।

সে বারবার নেসারকে সাবধান কর‌ছিল গা‌ড়ির গ‌তি ঠিকঠাক মত মেইন‌টেইন করার জন‌্য। কে শো‌নে কার কথা?

রাস্তার মাঝামা‌ঝি এসে প‌রে‌ছি।

চা‌রি‌দি‌কে পাহার। দুহাজার পঞ্চাশ টাকা রাস্তার টোল প‌রি‌শোধ ক‌রে কেবল পাব‌লিক রাস্তায় আম‌দের গা‌ড়ি‌টি উঠে‌ছে। তার কিছুক্ষণ প‌রেই ক‌য়ে‌টি পু‌লি‌শের গা‌ড়ি। স্পিড মিটার নি‌য়ে দা‌ঁড়ি‌য়ে আছে। পু‌লিশ হাত দি‌য়ে  সিগনাল দিল।

নেসার গা‌ড়ি থামাল।

পু‌লিশঃ  ইউ আর ওভার স্পি‌ডিং, মান। (আগেই ব‌লে‌ছি এরা ম‌্যান‌কে মান উচ্চারন ক‌রে।) লুক এট দ‌্য মি‌টার। মোর দ‌্যান থার্টফাইভ কি‌লো‌মিটার।

নেসার বলল, ভুল হয়ে গে‌ছে। মাফ ক‌রে দেয়া যায় কীনা?

পিছন থে‌কে হাওয়‌ে বলল, নো মান। সে মাফ কর‌বে না। কিছু পয়সাপা‌তি দি‌লেই ছে‌ড়ে দি‌বে।

আমরা বললাম, দে‌খো তোমার দে‌শের পু‌লিশ কীভা‌বে ভাও করবা ক‌রো। মাফাটাফ চে‌য়ে হ‌লেও দেখো। ছাড়ে কীনা?

নারী পুলিশটি পিছ‌নে বসা আমা‌দের গাইড হাওয়ে সা‌থে জ‌্যামাইক‌্যান ব্রো‌কেন ইং‌লি‌শে কথা বল‌তে লাগল। ম‌নে হ‌লে নারী পু‌লিশ তো  দিলটা গল‌তে পা‌রে।

কিন্তুু না। অনু‌রো‌ধে কাজ হলনা। নগদ তিন হাজার টাকায় ছা‌ড়‌তে রাজী হল।

বিষয়টা আমার জন‌্য খুবই নী‌তি বিব‌র্জিত ও অপছন্দনীয়। কিন্তুু কী আর করা? ভিন দে‌শে ঝা‌মেলা এড়া‌তে….কর‌তেই হল।

এরপর দে‌খি নেসা‌রের স্পিড নিয়‌ন্ত্রিত। আস‌লে শা‌স্তি দি‌লে আচরণ অ‌নেক সময় নিয়ন্ত্রিত হয়। ত‌বে সব সময় না। সবার ক্ষে‌ত্রেও হয়না। কারন জেল খাটার প‌রেও মানুষ একইঅপরাধ আবার জড়ায়।

কা‌জেই শা‌স্তি সব সময় আচরণ প‌রিবর্তন কর‌তে পা‌রেনা।

চার‌ তিনদিন হ‌য়ে‌ছে জ‌্যামাইকা‌তে এসেছি।  রাজধান‌ী কিং‌স্টো‌ন শহর থে‌কে একটু দূ‌রে ছোট শহর ওল্ড হারবারের এক বাসায় উঠে‌ছি। বাসা‌টি‌তে এয়ারবিএন‌বি ক‌রা হয়।  মা‌নে পর্যটক‌দের ভাড়া‌ দেয়া হয়। ত‌বে বন্ধু নেসা‌রের ক‌লি‌গের নি‌জের বাসা হওয়ায় আমা‌দের‌ ফ্রি থাক‌তে দি‌য়ে‌ছে।

ম‌ন‌টে‌গো বে সি‌টি থে‌কে ওল্ড হারবারের দুরত্ব খুব বে‌শি না। ষাট কি‌লোমিটার মাত্র। কিন্তুু গা‌ড়ি চা‌লি‌য়ে যে‌তে লা‌গে তিন ঘন্টারও বেশি।

ট‌রেন্টো থে‌কে ফ্লেয়ার এয়‌্যারলাইন্সের ছোট একটি  বিমানে চড়ে জ‌্যামাইকার উদ্দে‌শে রওনা দিয়ে ছিলাম গত সোমব‌া‌রে।

ঘন্টা চা‌রেক ওড়ার  পর জ‌্যামাইকার রাজধানী কিংস্ট‌নের পাশেই  ছোট্ট একটি দ্বী‌পে  নরম‌্যান ম‌্যান‌লি আন্তর্জা‌তিক  বিমান বন্দর অবতরন করি। কাস্টমস্ ফরমা‌লি‌টিজ কর‌তে বে‌শি সময় লাগল নাই। আধা ঘন্টার মত।

জ‌্যমাইকা‌তে আস‌তে ক‌্যানা‌ডিয়ান‌দের যে‌হেতু ভিসা লা‌গেনা, সে‌হেতু ইমি‌গ্রেশনের ফরমা‌লি‌টিজ একেবা‌রে সহজ ছিল।

ক‌্যানা‌ডিয়ানরা যে কত প্রিভি‌লেজড্ তা তাঁরা ক‌্যানাডার বাইরে না গেলে বুঝ‌তে পারেনা।

ফ্লাই করার আগেই অনলাইনে রেন্টাল কার বু‌কিং দেয়া ছিল। এয়ার‌ পোর্টের সা‌থে লাগোয়া রেন্টাল কা‌রের অ‌ফিস। প‌নের মিনি‌টের ম‌ধ্যেই সব ফরমা‌লি‌টি‌জ শেষ ক‌রে গা‌ড়ির চা‌বি হা‌তে পেলাম।

বাধসাধল গা‌ড়ি ড্রাইভিং নিয়ে। আমরা কানাডায় বামপা‌শে ব‌সে গা‌ড়ি চালি‌য়ে অভ‌্যস্ত , কিন্তুু জ‌্যামাইকা‌তে উল্টো দি‌কে। মা‌নে বাংলা‌দে‌শের মত। রাস্তার বামপাশ দি‌য়ে ড্রাইভ কর‌তে হয়। গাড়‌ি পা‌র্কিং লট থে‌কে বের হ‌তে একটু সম‌স‌্যাই হল।

নেসার প্রথ‌মে চালা‌নোর চেষ্টা ক‌রে ব‌্যর্থ হল। আমি স্টিয়ার ধরলাম সাহস ক‌রে। চিন্তা করলাম যা হবার হ‌বে। তাও ভুল ক‌রে ক‌য়েক ডান‌দি‌কে চ‌লে গি‌য়ে‌ছি। সাম‌নে আপকা‌মিং ট্রা‌ফিক। কি‌ যে বিজি‌কি‌স্তিরা অবস্থা। হাত জোর ক‌রে ক্ষমা চে‌য়ে রক্ষা। নইলে হিট ক‌রে দিত। হর্ন তো অহরহ খা‌চ্ছি স্লো ড্রাইভিং এর কার‌নে।

ক‌য়েক কি‌লো যাওয়ার পর দুজন সিদ্ধান্ত নিলাম লোকাল রাস্তা দি‌য়েই যা‌বো। কোন হাইও‌য়ে ধ‌রে যা‌বোনা। রাস্তার পা‌র্শ্বে মানু‌ষের ঘরবা‌ড়ি, জীবন পদ্ধ‌তি দেখ‌তে দেখ‌তে যা‌বো। যে কথা সেই কাজ।

লোকাল‌য়ের মধ‌্য দি‌য়ে সরু রাস্তায় গা‌ড়ি চালা‌চ্ছি।

রাস্তা দুপা‌শে খুব অল্প মানুষের হাঁটাচলা লক্ষ‌্য কর‌ছি। বি‌কেল স্থানীয় বি‌কেল পাচটার মত হ‌বে। বাইরে অ‌নেক লোক থাকার কথা। কিন্তুু নাই। যা‌দের‌কে দে‌খি সবাই কা‌লে মানুষ। অবশ‌্য এখান নব্বই শতাংশই আফ্রিকার বংশ‌দ্ভূত।

মা‌ঠে ও হালকা জঙ্গ‌লে প্রচুর ছাগলের পাল চো‌খে পড়ল। একেবা‌রে বাংলা‌দে‌শের ছাগ‌লের মত। তারা ঘাস খা‌চ্ছে।

নেসারকে বললাম, বাস‌ায় পৌঁ‌ছে ছাগ‌লের মাংস দি‌য়ে ভাত খা‌বো। খুব সুস্বাদু হ‌বে রে! একবা‌রে দেশী ছাগল। ঘাস কাঁঠাল পাতা খাওয়া ছাগল।

নেসার বলল, হালাল মাংস তো পা‌বেন না ম‌নে হয়।

রাস্তার পা‌শে আখের খেত। আম গাছ আর কলা গা‌ছে প‌রিপুর্ন। আগাছা জঙ্গ‌লে ভরা।

স্থান‌ীয় রাস্তা-ঘা‌টের জ্বীর্ণ দশা। ভাঙ্গা‌চোড়া। খানাখ‌ন্দে ভরা।

ছোট ছোট টং দোকান। সেখ‌া‌নে লেখা রেষ্টু‌রেন্ট আর বার। জার্ক চি‌কেন। জ‌্যামাইকা‌তে জার্ক চি‌কেন খুব জন‌প্রিয়।  ডিম পাড়তে পা‌ড়‌তে মুরগী যখন বুড়া হ‌য়ে যান তখন সেটা‌কে না‌কি ব‌লে জার্ক চি‌কেন। সেটার মাংসের খুব কদর এখা‌নে। তুলনামুলকভা‌বে একটু সস্তাও।

ওলড্ হারব‌রে পৌঁ‌ছ‌তে সন্ধাই হ‌য়ে গেল। কারন জি‌পিএস ভাল সা‌র্ভিস দি‌চ্ছিল না। শেষমেষ টোল রোড ধ‌রেই আস‌তে হল। প‌নের কি‌লো‌মিটার টোল রোড ব‌্যবহার ক‌রে গুন‌তে হল সা‌ড়ে সাত‌শো ডলার–জ‌্যামাইকান ডলার। মানে স‌া‌ড়ে তিন হাজার টাকার মত।

এখা‌নে সব কিছু‌রই খুব দাম। সাধারন এক‌টি দুই লিটারের এক‌টি প‌া‌নির বোত‌লের দাম বাংলা‌দেশী টাকায় সা‌ড়ে তিন‌শো।

আর এক‌বেলা খে‌তে লা‌গে আড়াই থে‌কে তিন হাজার টাকা।

কোন একটা বি‌চে ঢুক‌তে লা‌গে এক হাজার টাকা।

ম‌নে হল কোন কিছুই ফ্রি নাই। ক‌্যা‌পিটা‌লিজ‌মের চরম ব‌হিঃপ্রকাশ।

ম‌নে হল এখানকার ম‌ানু‌ষেরা প‌া‌নির চে‌য়ে বিয়ার খায় বে‌শি। হাওয়েন‌কে দে‌খেই তা বু‌ঝে‌ছি। সে চান্স পে‌লেই বিয়ার খায়।

‌সে বাথরু‌মে ঢুক‌লে আধা ঘন্টার আগে বেরোয় না।

আমি বললাম, হাওয়েন, এতক্ষণ বাথরু‌মে কী ক‌রো?

-মান, সাত‌দিন প‌রে হাগ‌তে গে‌ছি। সময় লাগ‌বে না?

-তোমার তো তাহ‌লে চরম কোষ্ঠ কা‌ঠিন‌্য।

-ইয়া মান। দে‌খোনা ওষুধ খাইলাম।

– তু‌মি তো পা‌নি খাও না, খাও শুধু বিয়ার। কোষ্ঠকা‌ঠিন‌্য হ‌বেনা?

-মান, আর ইউ এ ডক্টর?

-আরে না। তবে ডাক্তাররা ব‌লে বে‌শি বে‌শি পা‌নি পান কর‌তে। তাহ‌লে পায়খানা সহজ হয়।

আমার কথা ম‌নে হয় কাজ হয়ে‌ছিল। যে কয়‌দিন সে আমা‌দের সা‌থে থাকল সে কয়‌দিন হাও‌য়েনকে দেখলাম বেশ পা‌নি পান কর‌তে।

মানু‌ষের জানার,শেখার, বোঝার এবং  দেখারও শেষ নেই।

এই সত্তর বছর বয়‌সের হাও‌য়ে‌নের কথাই ধরুন। সে জীব‌নে কখ‌নো হো‌টে‌লে থা‌কে‌নি।

সে তার এই দীর্ঘ জীব‌নে কানাডায় কা‌টি‌য়ে‌ছে প‌চিশ বছর। এখন সে রিটায়ার‌মেন্ট লাইফ কাটা‌চ্ছে নিজ জন্মভু‌মি জ‌্যামাইকা‌তে।

মন্টে‌গো বে শহ‌রের এক‌টি হো‌টে‌লে সে আমা‌দের সা‌থে কাটাল। আমরাই তার থাকা খাওয়ার ব‌ন্দোবস্ত ক‌রলাম। আম‌া‌দে‌র সা‌থে।

হো‌টেলটার বু‌কিং ছিল অল ইনক্লু‌সিভ।

মা‌নে থাকাখাওয়া মদখাওয়া সব ভাড়ার ম‌ধ্যেই ধরা।

সে তার পছন্দমত নানা পদ দি‌য়ে রা‌তের খাবার খেল।

তারপর পিংপং খেলল, বা‌রে বা‌সে যতক্ষণ ইচ্ছে মদ খেল।

সুইমিং পু‌লের পা‌শে ব‌সে আরাম করল, বি‌চে ব‌সে থাকল। ত‌বে সে পা‌নি‌তে নামল না। কারন সে সাঁতার জা‌নেনা। সকা‌লে চমৎকার ব্রেকফাস্ট করল।

দুপুর বা‌রোটায় আমরা হো‌টেল ছাড়লাম।

হো‌টেল ছাড়ার পর তা‌কে জিঞ্জাসা করলাম, হাও‌য়েন ম‌ন্টে‌গো বে‌তে তোমার কেমন লাগল? সে জানাল, মান, এই রাত আমার জীব‌নের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়।

বললাম কেন?

কারন আমি জীব‌নে কখ‌নো হো‌টে‌লে থা‌কিনি। এরকম আদর আপ‌্যায়ন পাইনি।

হাও‌য়েন কখ‌নো বিয়ে ক‌রে‌নি। একজন গার্ল ফ্রেন্ড ছিল বহু আগে। সেও ছে‌ড়ে গে‌ছে। সে এখন একদম একা।

বললাম, এখনতো একটা গার্লফ্রেন্ড নি‌তে পা‌রো।

সে বিষয়‌টি এড়ি‌য়ে গি‌য়ে আমা‌দের তাঁড়া দি‌য়ে বলল, মান, ইট ইজ গে‌টিং ডার্ক নাউ। লেটস্ গো হোম।

নাহ! এখন তো সন্ধা ঘনা‌য়ে এস‌ে‌ছে। বা‌ড়ি যাওয়ার সময় তো হ‌য়ে এস‌ে‌ছে। চল বা‌ড়ি যাই।

শুক্রবা‌রে হাওয়েনের জ‌্যামাইকা‌কে  বিদায় জা‌নি‌য়ে ট‌রোন্টা‌তে ফিরলাম।

 

টর‌ন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles